নোয়াখালীতে আবারো মাথা ঝাড়া দিচ্ছে কিশোর অপরাধীরা, চাঁদাবাজি থেকে খুন সবকিছুতেই আধিপত্য।
চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল, সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৫১ মিনিট। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের গঙ্গাবর এলাকায় সিসিটিভির ফুটেজে ফুটে উঠে আসে, লাবিব নামের এক তরুণকে অপহরণের দৃশ্য। এসময় বাধা দিতে আসলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ইয়াছিন নামের এক যুবক।
এ ঘটনার একদিন আগে, ২৭ এপ্রিল জেলা শহর মাইজদী বার্লিংটন মোড়ে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসানকে। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা অধিকাংশই উঠতি বয়সী কিশোর।
নোয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে স্কুলগামী ছাত্রীদের উত্যক্ত, চাঁদাবাজি, ভাঙচুর, মাদক, অপহরণ, হত্যাসহ অসংখ্য অপরাধ করছে শিক্ষার্থীরা। গেলো এক মাসে এক উপজেলাতেই ঘটেছে ৩টি হত্যার ঘটনা।
এক ভুক্তভোগী জানান, ঘরের দরজা-জানালা থেকে শুরু করে কোনো আসবাবপত্রই রাখা হয় নি। প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আরেক এলাকাবাসী জানান, প্রশাসনকে অনেকবার বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আরেকজন জানান, এরা সমাজে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত।
স্থানীয়রা জানান, ক্লাসের সময় শহরের অলি-গলি কিংবা পার্কেই ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের। এদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি স্থানীয়দের।
পুলিশ বলছে, অপরাধীদের দমনে তারা সক্রিয়। কিশোর অপরাধীদের অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবেও ভূমিকা নেয়ার পরামর্শ পুলিশের এই কর্মকর্তার।
নোয়াখালী জেলা পুলিশের ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘কাউন্সেলিং, বিভিন্ন মোটিভেশনাল কার্যক্রম আমাদের হাতে রয়েছে। যখন যেখান থেকে আমাদের কাছে কিশোর গ্যাং সংশ্লিষ্ট সংবাদ আসছে অপরাধের বিষয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে রেসপন্স করছি এবং তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।’
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নোয়াখালীর ৯ টি উপজেলা থেকে পাইপগান, বন্দুক, কিরিচ, চাইনিজ কুড়াল, ড্যাগার, রামদা ও চাপাতি সহ দেড় শতাধিক অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র ও মাদক কারবারে জড়িত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।