২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে গাবুরার অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ, পাকা সড়ক কিংবা উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়দের ভাষায়, এই ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের আগমন গাবুরায় ‘যোগাযোগ বিপ্লবের সূচনা’।
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘এই প্রথম আমাদের ইউনিয়নে ইঞ্জিনচালিত কোনো তিন চাকার ভ্যান চলাচল শুরু হয়েছে। এতদিন মানুষকে মোটরসাইকেলেই চলাচল করতে হতো, যা ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারি সহায়তা পেলে উন্নতমানের রাস্তা নির্মাণ করে ভ্যান চলাচলের পরিধি আরো বাড়ানো যাবে। এতে মানুষ কম খরচে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা উদ্যোগ কতদূর গড়ায়।”
তিনি জানান, প্রথম ধাপে হরিষখালী থেকে সোরা ব্রিজ পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। এরপর পার্শ্বেমারী ও চাঁদনীমুখা পর্যন্ত এ সেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আগে ভাবতেই পারতাম না এখানে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান আসবে। এখন হাসপাতালে যাওয়া, বাজারে যাতায়াত বা মালামাল পরিবহন অনেক সহজ হবে। এটি আমাদের অনেকদিনের স্বপ্ন পূরণ।’ তিনি আরো জানান, আগে এখানে পায়েচালিত ভ্যান থাকলেও যাত্রী পরিবহন হতো না। আইলার পর রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষ নদীপথে চলাচল করত। ছোট ছোট রাস্তা দিয়ে শুধু ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচল করত। সম্প্রতি কিছু এলাকায় নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের উদ্যোগে এ মোটরভ্যান চালু করা সম্ভব হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনি খাতুন বলেন, ‘গাবুরার মতো দুর্গম এলাকায় ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল শুরু হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’