বর্ষা এলেই লালমাই পাহাড়ের ঢলে প্লাবিত হয় কুমিল্লার দক্ষিণাংশ। জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে কুমিল্লা সিটির ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৪০০ একর ফসলি জমি।
পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় অনাবাদী হয়ে পড়ছে ফসলের মাঠ। জলাবদ্ধতা শুধু কৃষিজমিতেই নয়, বরং বর্ষায় ভোগান্তিতে পড়েছে কোটবাড়ি এলাকার রামপুর, গন্ধামতি ও চাঙ্গিনী গ্রামের শত শত মানুষ।
এলাকাবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘প্রায় ৫০০ একর জমি আজ ১৫ বছর ধরে ১০ কেজি ধানও হয় না। এখানে বর্ষা মৌসুমে নামা যায় না।’
আরেকজন বলেন, ‘এখানে ৩টি ফসল হত, কিন্তু এখন একটা ফসলও হয় না।’
কুমিল্লায় জনসংখ্যা চাপের সাথে বাড়ছে আবাসনের বিস্তার। তবে শহরের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও দখল-দূষণে খালগুলো পরিণত হয়েছে সরু নালায়। ফলে কিছুক্ষণের বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এলাকার এক যুবক বলেন, ‘এটার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া অবশ্যই সিটি করপোরেশনের কর্তব্য। কারণ রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাতে মানুষের চলাফেরায় অনেক অসুবিধা হচ্ছে।’
প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে জলাধার ও খালগুলোকে প্রাকৃতিক নকশায় ফিরিয়ে আনতে হবে। একইসাথে পরিকল্পিতভাবে করতে হবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা।
কুমিল্লার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে খালের প্রসস্ততা বাড়িয়ে দিয়ে আর ডাকাতিয়া নদীর গভীরতা আরো একটু বাড়িয়ে ড্রেনেজ করতে হবে সেখানেও।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভুঁইয়া বলেন, ‘খাল খননের জন্য ইতোমধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি এবং দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সেটা চালু করবো। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে আমরা ড্রেনগুলো চালু করার জন্য কার্যক্রম শুরু করবো।’
জলাবদ্ধতা শুধু মৌসুমি নয় এটি কুমিল্লার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নেবেন সংশ্লিষ্টরা- এমনটাই প্রত্যাশা পৌরবাসীর।