শারীরিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মিথিলাপুরে হুমায়ুন কবির গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। অনেকটা ধারদেনা করে শুরু করা খামারে এবার কোরবানিতে বিক্রয়যোগ্য দেশি, শাহীওয়াল ও পাকরা জাতের ১১টি মাঝারি সাইজের গরু। তবে উৎপাদন খরচের বিপরীতে বাজারে গরুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় প্রান্তিক এই খামারি।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘খামারটা একটু বড় করার পরিকল্পনা আছে। যুব ট্রেনিং সেন্টার থেকে ট্রেনিং করেছি। উনারা এক লাখ টাকা ঋণও দেবে বলেছে।’
জেলার অন্তত ২০ হাজার খামারি কোরবানির ঈদ ঘিরে স্বপ্ন বুনেছেন। প্রান্তিক খামারিদের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠা প্রায় ১৬ হাজারের বেশি খামারে পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে কোরবানির আগ মুহূর্তে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু অনুপ্রবেশের প্রবণতা রয়েছে। খামারিরা বলছেন, ২৪ এর বন্যার মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়, গো-খাদ্যের সংকট মোকাবিলা করে লাভের আশায় পশু লালনপালন করেছেন তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, কোরবানির পশু পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় ভারতীয় পশু অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নির্দেশনা রয়েছে। বিজিবি'র পক্ষ থেকেও চোরাচালান বন্ধে বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি ।
কুমিল্লার অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘বড় বড় হাটগুলোতে আমাদের মেডিকেল টিম থাকবে। জেলা সমন্বয় সভার মিটিংয়েও আমরা বলেছি, যে মেডিকেল টিম বসার ক্ষেত্রে ইজারাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
বিজিবির কুমিল্লা ১০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, ‘যেসব অঞ্চলে সম্ভাব্য গরু চোরাচালান হতে পারে সেসব এলাকায় আমাদের টহল নজরদারি বৃদ্ধি করা এর পাশাপাশি অতিরিক্ত এলাকাগুলোকে মার্কিং করে গোয়েন্দা নজরদারি আওতার মধ্যে আমরা নিয়ে এসেছি।’
কুমিল্লায় এবার কোরবানিতে চাহিদা রয়েছে দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬টি পশুর। বিপরীতে ৩৬ হাজার ৭৪টি ছোট-বড় খামারি উৎপাদন করা হছেন দুই লাখ ৬০ হাজার ৭৫২ পশু।
মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বন্যায় খাদ্য সংকটের পরও কিছুটা লাভের আশায় এবার চাহিদার তুলনায় বেশি পশু উৎপাদন করেছেন খামারিরা। কিন্তু ভারতীয় গরুর প্রবেশ ঠেকাতে না পারলে ভেস্তে যাবে সে স্বপ্ন। তাই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ খামারিদের।