খেলার মাঠের অভাবে বন্দি শৈশব: ফেনীতে ঝুঁকিতে শিশুদের বিকাশ

ফেনী শহর
এখন জনপদে
0

শিশু-কিশোরদের খেলার জন্য নেই পর্যাপ্ত মাঠ, উদ্যান, পার্ক বা বিনোদনকেন্দ্র। আছে শুধু উঁচু দালান, অসংখ্য রেস্টুরেন্ট আর হাসপাতাল। প্রজন্ম বেড়ে উঠছে যেন এক বন্দি পরিবেশে। আসক্তি বাড়ছে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অগ্রসরমান জেলা ফেনীর এমন অবস্থায় ঝুঁকিতে পড়েছে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য।

যে সময় থাকার কথা ছিল খেলার মাঠে, লুটোপুটি করার কথা সবুজ ঘাসে; সে সময় কাটছে গ্রিলঘেরা বারান্দা বা অট্টালিকার ছাদে। এই অপলক দৃষ্টি যেন বলে দেয় মুক্ত আকাশের নিচে ছুটে চলার হাহাকার।

তিন লক্ষাধিক মানুষের ফেনী শহরে নেই মানসম্মত পার্ক। গড়ে উঠছে কেবল বড় বড় দালান, হোটেল আর হাসপাতাল। এমন অবস্থায় সন্তানদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাজাঝির দীঘির পাড়ে একটি নামমাত্র শিশুপার্ক থাকলেও পরিসর ও নগণ্য। এ যেন ‘কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন’। বিনোদনকেন্দ্রের অভাবে সন্তানদের ইনডোর গেম সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছেন অভিভাবকরা।

মাঠ না থাকায় চাপ পড়েছে জেলার একমাত্র ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামের উপর। ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে প্রতিদিন এখানে অনুশীলন করে চার শতাধিক শিক্ষার্থী।

চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন খোলা মাঠ ও পার্ক। যা ফেরানো গেলে কমবে মোবাইল আসক্তি, বাড়বে মানসিক প্রশান্তি।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ড. মো. নুরুল আবসার বলেন, ‘পরিবেশের সঙ্গে অ্যাডাপটেশন, মানে খাপ খাওয়ানোটা নিশ্চয়ই ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া ঘন ঘন অসুখ হয়, দেখবেন যে বাচ্চাদের মধ্যে হাঁপানি হয়ে যাচ্ছে, স্থূলতা বাড়তেছে। মানে বোন ডেভেলপমেন্ট প্রপারভাবে হচ্ছে না।’

এমন অবস্থায় জেলার সব উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান ক্রীড়া কর্মকর্তারা।

ফেনী জেলা ক্রীড়া অফিসার হীরা আক্তার বলেন, ‘দাগনভূঞা ও সদর উপজেলায় ইতোমধ্যে জায়গা দেখা হয়েছিল। এগুলোর কাজ কমপ্লিট হয়ে গেলেই আমাদের বাচ্চারা খেলাধুলার প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাবে।’

সচেতন নগরবাসীর প্রত্যাশা, কংক্রিটের জঞ্জালে নয় পরিকল্পিত নগরায়ণের মধ্য দিয়ে ফিরে আসুক শিশুদের সুন্দর শৈশব।

এনএইচ