পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় জামদিয়া ও পদ্মবিলা নামে নতুন দুটি স্টেশন ও সদর উপজেলায় রূপদিয়া জংশন পুনর্নির্মাণ করা হয়। স্টেশনগুলো দিয়ে ঢাকা-যশোর নতুন রুটের ঢাকা-বেনাপোল রুটের ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ ও ঢাকা-খুলনা রুটের ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ যাতায়াত করে। অথচ কোনো ট্রেনের যাত্রা বিরতি নেই স্টেশনগুলোতে। যদিও প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ করা হয়েছে স্টেশনের নতুন ভবন ও প্লাটফর্ম। রয়েছে অন্যান্য যাত্রী সুবিধা, নিয়োগ করা হয়েছে পর্যাপ্ত জনবল। তবে দ্রুত স্টেশনগুলোতে ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, সরকার এখানে হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু আমাদের আশা পূরণ করতে পারে নি। ঢাকার ট্রেনগুলো এখন আড়াই ঘণ্টায় ঢাকায় যাচ্ছে কিন্তু আমরা যেতে পারছি না। এখানে যাত্রাবিরতি না থাকায় আমাদের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে রেল স্টেশন তৈরি করলেও ট্রেন থামে না। তাই এটা তাদের কোনো কাজে আসছে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যর উপরও প্রভাব পড়ছে।
তারা জানান, স্টেশন মাস্টারসহ লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন ট্রেন না থামায় কাজও হয় না। এ অঞ্চলে রেললাইন হয়ে যে সুবিধা হয়েছে তার কিঞ্চিৎ পরিমাণ ও আমরা পাচ্ছি না।
আন্তঃনগর ট্রেনের নতুন এসব স্টেশনে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। এগুলো ইন্টারসিটি ট্রেন, তবে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যাত্রা বিরতি আছে। যখন লোকাল কমিউটার চালু হবে, তখন ওই সব স্টেশনে ট্রেনগুলো দাঁড়াবে বলে জানান স্টেশন মাস্টাররা।
পদ্মবিলা রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মশিয়ার রহমান বলেন, ‘কিছু গাড়ি আছে এখান থেকে মালামাল সংগ্রহ করে যেমন ফসল, ফল এগুলো। এই ট্রেনগুলো চালু হলে আশা করি এই এলাকায় ট্রেন থামবে এবং মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।’
রূপদিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘রুপদিয়া বণিক সমিতি ও এখাঙ্কার লোকজন আমাদের এখানে স্টেশন স্থাপনের জন্য আমাদের জানিয়েছে। আমরা আমাদের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘মানববন্ধনসহ যে প্রতিবাদ সভাগুলো হচ্ছে তার তথ্য আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেছি। সরকার যেহেতু স্টেশন তৈরি করেছে তাহলে নিশ্চয় আস্তে ধীরে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বরে এ রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।