আজ (শনিবার, ২ আগস্ট) দুপুর সোয়া ২টার দিকে জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া দক্ষিণপাড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা গোরস্থানে রাইসার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিমান বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি হিসেবে স্কোয়াড্রন লিডার জিহাদুল ইসলাম ও ফ্লাইং অফিসার রুদাবা কামালের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি দল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাইসার কবর জিয়ারত করেন।
এ সময় বিমান বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রায়হানুর রহমান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজালাল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বাজড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা মসজিদে বাদ জোহর দোয়ার আয়োজন করা হয়। পরে এতিমখানার শিশুদের মাঝে তবারক বিতরণ করেন বিমান বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে নিহত রাইসার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে পরিবারটিকে সমবেদনা জানান বিমান বাহিনী।
জানা যায়, গত ২১ জুলাই বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাইসা মনি (৯)। দুর্ঘটনার পর থেকে রাইসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটির মুখমণ্ডলের অংশবিশেষ দেখে রাইসা হিসেবে দাবি করেন বাবা শাহাবুল শেখ (৪৪)।
বাবার দাবির প্রেক্ষিতে সিএমএইচ থেকে ২২ জুলাই বিকেলে মরদেহের ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ডিএনএ রিপোর্টে রাইসার মরদেহ শনাক্ত হলে গত ২৪ জুলাই দিবাগত রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরদিন শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাইসার মরদেহ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া দক্ষিণপাড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা গোরস্থানে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামের শাহাবুল শেখ ও মীম আক্তারের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে সিনথিয়াও (১৪) একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছেলে রাফসান (৪) সবার ছোট। আর রাইসা ছিল সন্তানদের মধ্যে দ্বিতীয়।
পরিবার পরিজন নিয়ে রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ ঢাকার উত্তরা নয়ানগরে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। শাহাবুল একটি গার্মেন্টস এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। উচ্চশিক্ষায় সু-শিক্ষিত করার জন্য উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাইসাকে ভর্তি করেন তিনি।
রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, ‘আমার সোনা মনির জন্য আপনারা শুধু দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমার সন্তান রাইসা মনিকে জান্নাতবাসী করেন। আমার আর কি বলার আছে।’
বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী রাইসা মনির সমাধিতে বিমান বাহিনীর প্রধানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা নিহতের বাড়িতে আসেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটির সঙ্গে ছিলাম। রাইসার পরিবারের পাশে সব সময় থাকবে উপজেলা প্রশাসন।’