যমুনার ভাঙনে বিলীন গ্রাম, অবৈধ বালু উত্তোলনে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা

মানিকগঞ্জ
স্থানীয়দের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
এখন জনপদে
0

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। নদীর ভাঙনে গ্রাম, বাজার, স্কুল-মাদ্রাসা বিলীন হলেও বালু তোলা বন্ধ হয়নি এ অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা।

আজ (শনিবার, ৯ আগস্ট) বিকেলে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা কয়েকশ’ মানুষ ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সড়কে জড়ো হয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে অংশ নেন বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম ইয়াছিন, বাঘুটিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক সুপার তাজুল ইসলামসহ ইউনিয়ন পরিষদের সব সদস্য।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৭ মে বালুমহাল ইজারার সময় ইজারাদারদের শর্ত দেয়া হয়েছিল সীমার বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করা যাবে না। শর্ত ভাঙলে ইজারা বাতিল হবে। কিন্তু সেই শর্ত উপেক্ষা করে নদীর অন্য অংশ থেকেও বালু তোলা অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে যমুনার ভাঙনে এরইমধ্যে বাজারসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে।

নদী ভাঙনের ভয়াবহতায় নিজ ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে চারতলা ভবনের দুটি মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ভুক্তভোগীরা জানান, এর আগে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। পরে জুলাই মাসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের অপসারণ ও বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন।

আরও পড়ুন:

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান নুরেন বলেন, ‘ইজারার সীমানার বাইরে থেকে বালু কাটার সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সীমানার বাইরে গিয়ে কেউ বালু উত্তোলন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের সঙ্গে কারও সখ্য নেই। আগেও অভিযান চালিয়ে মামলা দিয়েছি।’

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ইজারার সীমানা লঙ্ঘন করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা এরইমধ্যে অভিযান চালিয়েছি এবং নিয়মিত মামলা দিচ্ছি। এ অভিযান আরও কঠোরভাবে চলবে।’

এলাকাবাসীর দাবি, শুধু মাঝে মাঝে অভিযান নয়, স্থায়ীভাবে নজরদারি বাড়াতে হবে। তাহলেই যমুনার ভাঙন রোধ ও অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব হবে। তাদের আশা, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে আবারও তারা ভাঙনের ভয় থেকে মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

এসএস