গেল এক সপ্তাহ ধরে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এতে বাড়ছে আতঙ্ক। খেয়ে না খেয়ে অনাহারে এক-একটি দিন কাটছে নির্ঘুমে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত কুষ্টিয়ার পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার এক মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও আজ নতুন করে বেড়েছে আরও চার সেন্টিমিটার পানি। ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরের চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা এখন পানিবন্দি। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গৃহপালিত গবাদিপশুরও। পানিবন্দি এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রাখা হয়েছে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান। তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা ও ৫৭৩ হেক্টর চরের আবাদি ফসলি জমিও।
পানিবন্দি স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যার পানিতে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মাছ ভেসে গেছে পানিতে। গবাদি পশু নিয়েও তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানান, বন্যার পানির কারণে একমাসের বেশি সময় থেকে স্কুল বন্ধ আছে।
দুর্ভোগ বাড়লেও পানিবন্দি এলাকাগুলোতে এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন পানিবন্দি মানুষ।
দৌলতপুর চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ সিরাজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘ধান, সবজি সব বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্যে সহযোগিতা আসেনি।’
তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পানিবন্দি মানুষের পাশে রয়েছে তারা। দেয়া হচ্ছে ত্রাণ-সহায়তাও।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা শুকনো খাবার সঙ্গে এনেছি। বিভিন্ন ব্যাক্তি এবং পরিবারকে খাবারগুলো দেয়া হচ্ছে।’
ব্যাপক হারে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সব বাঁধ এলাকা বাড়তি নজরদারিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও সজাগ রয়েছেন।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি নিয়ে আমরা সজাগ আছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা কাজ করছে এ বিষয়ে।’
এদিকে কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। বর্তমানে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি।