ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর, নীলাকাশের নীচে স্বচ্ছ জলরাশি আর পাহাড়ের অপূর্ব মিতালী দেখতে কিছুদিন আগেও পর্যটকের ঢল নামতো সিলেটে। তবে পাথর লুটের ঘটনায় এখানকার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এখন সুনসান নীরবতা ।
শুধু ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর নয়, একই চিত্র জাফলং, রাংপানিসহ সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রে। ছুটির দিনেও নেই মানুষের কোলাহল। যারা আসছেন তারাও হতাশ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে।
পর্যটকরা জানান, এখানে তারা ভারতের পাহাড়, পাথর ও স্বচ্ছ পানি; এসব দেখতে আসেন। কিন্তু এখন তিন ভাগের দুই ভাগ পর্যটকই আসছেন না পাথর লুটের ঘটনায়। প্রশাসন যেন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, দাবি তাদের।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাথর লুটের ঘটনায় কর্মহীন হয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। সেখানে ক্যামেরাম্যান, নৌকাচালক, গাইড সবারই প্রায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে আছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তারা পরিবার নিয়ে ভালো কিছু খেতেও পারছেন না। তাদের পুঁজি ভেঙে চলছে সংসার।
এমন বাস্তবতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে হোটেল, মোটেল, পরিবহনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট নানা ব্যবসায়। পর্যটক কমে যাওয়ায় কয়েক শ’ কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
আরও পড়ুন:
সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপ সাবেক সভাপতি সুমায়েত নূরী চৌধুরী জুয়েল বলেন, ‘প্রতিদিনই এখানে গেস্ট আসতেন। এ ঘটনার পর লোকজন অনেক কমে গেছে।’
হোটেল গোল্ডেন সিটি জেনারেল ম্যানেজার মৃদুল কান্তি দত্ত বলেন, ‘আমাদের ক্ষতির পরিমাণ এতোই বেশি যে, তা গণনা করে বের করার মতো নয়। শুধু হোটেল নয়, পর্যটনের সঙ্গে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলছেন, জেলার পর্যটন খাত নিয়ে দ্রুত মহাপরিকল্পনা নেয়া না হলে, এ শিল্প অচিরেই ধ্বংসের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, সাদাপাথরসহ সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র রক্ষায় মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে।
আটাব ও সাবেক সভাপতি সিলেট, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল জব্বার জলিল বলেন, ‘প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের মনোবল দৃঢ় করতে কাজ করবে বলে আশা করি।’
জেলা প্রশাসক সিলেট শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘আমরা পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছি। পাশাপাশি স্থায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করবো। আশা করি আমরা এর স্থায়ী সমাধান পাবো।’