কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের খিলপাড়া বুরুঙ্গারচরের বাসিন্দা রতন মিয়া। কিছুদিন আগে তার এক আত্মীয়ের বিয়ের কথা চূড়ান্ত করতে বাড়িতে আসেন পাত্রপক্ষ। তবে বাড়ির পাশে ময়লার ভাগাড় ও দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে চলে যায় পাত্রপক্ষ। রতন মিয়ার অভিযোগ, ময়লাযুক্ত এ পরিবেশে কেউ আত্মীয় করতে চান না। দ্রুত এ দূষিত পরিবেশ থেকে মুক্তি চান তারা।
২০২১ সালের মে মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় চার একর জমিতে প্রায় দশ কোটি টাকা খরচে বানানো হয় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল। যেখানে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক পাম্প ও ফিল্টার মেশিন, যা দিয়ে বর্জ্য থেকে ময়লা পানি বিশুদ্ধভাবে আলাদা করা যাবে। প্রক্রিয়াজাত শেষে এ বর্জ্য রূপান্তর হবে জৈব সারে। ২০২২ সালের শেষের দিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দিলেও, এখনো চালু হয়নি প্রকল্পটি। পৌরসভা বলছে, অর্থ সংকট ও লোকবল না থাকায় এটি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা আছে। ২৭ কোটি টাকার একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনা অনুমোদিত হলে আমাদের যা যা কাজ করতে হয় তা করবো।’
আরও পড়ুন:
ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ ট্রাক বর্জ্য ফেলা হয়। ময়লার স্তূপ ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে। অল্প বৃষ্টিতেই এ আবর্জনা ভেসে যায় সড়ক ও ফসলি জমিতে। এতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি উর্বরতা কমছে জমির।
স্থানীয়রা জানান, ময়লার দুর্গন্ধে তারা সাধারণ জীবন-যাপন করতে পারছে না। পৌর কর্তৃপক্ষকে ময়লা সরিয়ে ফেলার কথা জানালেও সেখান থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এদিকে পৌর প্রশাসক জানালেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেয়া হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভা প্রশাসক মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘আমরা স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করছি। পৌরসভার নিয়ম ভাঙলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি তদারকি বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’