ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় জামালপুরের একমাত্র বাস টার্মিনাল, নির্মাণের ৪ দশকেও নেই উন্নয়ন

জামালপুর
জামালপুর বাস টার্মিনালের বেহাল দশা
এখন জনপদে
1

নির্মাণের পর কেটে গেছে ৪ দশকের বেশি সময়। অথচ জামালপুর শহরের একমাত্র আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। ভবনের ছাঁদ ভেঙে রেড়িয়েছে রড, খসে পড়ছে পলেস্তারা। দিনে দিনে টার্মিনাল এলাকা পরিণত হয়েছে নোংরা, জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত স্থানে। টার্মিনালের উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ও আন্দোলনেও মেলেনি সুফল। তবে জেলা পরিষদের দাবি অবকাঠামো উন্নয়নে নেয়া হয়েছে মাস্টারপ্ল্যান।

জামালপুরের সঙ্গে দেশের সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিতে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ১৯৮৩ সালে শহরের দড়িপাড়া এলাকায় বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বগুড়াসহ ১০ থেকে ১২টি রুটে দিনে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার যাত্রী চলাচল করেন।

জামালপুর থেকে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা টার্মিনালের এখন জীর্ণদশা। নির্মাণের পর গেলো ৪৩ বছরে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খসে পড়ছে পলেস্তারা, ছাদ ভেঙে বেড়িয়ে এসেছে রড। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা। দিনে দিনে টার্মিনালটি পরিণত হয়েছে নোংরা ও জরাজীর্ণ স্থানে।

যাত্রীদের মধ্যে একজন জানান, বাসস্ট্যান্ডের অবস্থান ঠিক জায়গায় না হওয়ায় তাদের ঝুঁকি নিয়ে বাসে উঠতে হয়।

টার্মিনালে বিপুল সংখ্যক যাত্রী, চালক ও শ্রমিক কাজ করলেও তাদের বিশ্রামের জন্য নেই কোনো স্থান। এমনকি যাত্রীছাউনি ও ভালোমানের শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয় টার্মিনাল ব্যবহারকারীদের। পুরানো টার্মিনাল ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন:

পরিবহন মালিক, চালক ও শ্রমিকরা জানান, টার্মিনালের সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসককে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে তাদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

জেলার বাস মালিক সমিতির নেতারা জানান, পুরানো ভবন সংস্কারে দীর্ঘদিন ধরে জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। আধুনিক টার্মিনাল নির্মাণের দাবি সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনের ঘটনাও আছে। তবে টার্মিনালের উন্নয়নে মিলেছে শুধু আশ্বাসের পর আশ্বাস।

জামালপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন শুভ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা লিখিতভাবে আবেদন করেছি এবং দফায় দফায় তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। কিন্তু এর কোনো ফলাফল আমরা এখনও পাইনি।’

তবে জেলা পরিষদের দাবি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল অবকাঠামো উন্নয়নে ২৪ কোটি টাকার মাস্টারপ্ল্যান নেয়া হয়েছে, যার কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

জামালপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু বলেন, ‘২৪-২৫ অর্থবছরে আমাদের যে বরাদ্দ আছে, সেখান থেকে আমরা প্রথম দফায় ৮০ লাখ এবং পরে ৬০ লাখ টাকার প্রকল্প নিয়েছি।’

জেলার একমাত্র বাস টার্মিনালটি দ্রুত ব্যবহার উপযোগী ও আধুনিকায়নে প্রশাসনের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষা সবার।

এসএইচ