নাটোর সদর হাসপাতালের অস্থায়ী ডায়রিয়া ওয়ার্ড। রোগীদের চাপে কোথাও নেই তিল পরিমাণ জায়গা। কেউ চিকিৎসা নিচ্ছেন বেডে কেউ আবার মেঝেতে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে একের পর পর রোগী ভর্তি হচ্ছে এ ওয়ার্ডে।
শহরের উত্তর পটুয়াপাড়া থেকে অস্থায়ী ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এসেছেন মাহমুদা খাতুন ও তার দুই বছরের শিশু পুত্র আইয়ান। প্রথমে শিশু আইয়ান বমি ও জ্বর নিয়ে অসুস্থ হওয়ার পর হঠাৎ করেই ডায়রিয়া আক্রান্ত হন মাহমুদা খাতুনও।
রোগীদের অভিযোগ, পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পান করে শহরের ঝাউতলা, উত্তর পটুয়াপাড়া, বঙ্গজ্বল, উত্তর চৌকির পাড়সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হঠাৎ করেই শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ভয়ে অনেকেই পৌরসভার পানি ব্যবহার বন্ধ রেখেছেন।
স্থানীয়রা জানান, এ এলাকায় প্রতি পরিবারেই দুই থেকে তিনজন ডাইারিয়াতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের পান করার পানির জন্য এ সমস্যা হচ্ছে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন:
সিভিল সার্জন জানান, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে মজুত রয়েছে প্রায় দেড় হাজার আইভি স্যালাইন। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে দুটি মেডিকেল টিম। এছাড়া পৌরসভার মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট।
সিভিল সার্জন নাটোর মোক্তাদির আরেফিন বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন সরবারহ আছে। ওষুধ মজুদ আছে। আমরা পৌরসভার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।’
গতকাল (বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডায়ারিয়া রোগীদের খোঁজ নিতে সদর হাসপাতালে আসেন জেলা প্রশাসক। জানান, পৌরসভার পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সে সঙ্গে একজন সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের মনিটরিং টিম গঠনের কথাও জানান তিনি।
নাটোর জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ‘অ্যালারর্মিং বিষয় হলো এলাকার মানুষ পারি ফুটিয়ে পান করে না। এরইমধ্যে আমরা পানি চেক করার জন্য পানি বগুড়াতে পাঠিয়েছি। বিষয়টি আমরা এখন তদন্ত করে দেখবো।’
জনস্বাস্থ্য যাতে হুমকিতে না পড়ে সে লক্ষ্যে দ্রুত পানির লাইন পরিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।