২০১৪ সালে রাঙামাটি পাবলিক কলেজ স্থাপিত হওয়ার পর ২০১৫ সালে চারতলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণে প্রায় আট কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এরপর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও নেই দৃশ্যমান উন্নয়ন। অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারের জালিয়াতিতে হয়নি ভবন নির্মাণ।
বোর্ডের প্রকৌশলীদের যোগসাজশে ৪১ লাখ টাকার ভুয়া ব্যাংক সনদ দিয়ে সেবছরেই কাজটি করছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান দিপু। এরপর সামান্য ঢালাইয়ের কাজ করে তুলে নেন বড় অংকের অর্থ। জালিয়াতি প্রমাণিত হলে দুদকের মামলায় রুপালী ব্যাংক ম্যানেজার রুমা বড়ুয়া ও ঠিকাদার মুজিব গ্রেপ্তার হলে কার্যাদেশ বাতিল করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পরে উচ্চ আদালতে ঠিকাদারের করা রিটে আইনি জটিলতায় বন্ধ হয়ে যায় ভবনটির নির্মাণ কাজ। পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ভবনের নির্মাণ সামগ্রী।
এদিকে, কলেজে অ্যাকাডেমিক ভবন না থাকায় নয় কক্ষের অস্থায়ী টিনশেডে ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা। শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের বসার রুম, লাইব্রেরি, বিজ্ঞানাগার এবং কম্পিউটার ল্যাব সংকটে দীর্ঘদিন ধরে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের খেলার মাঠ নেই। ক্লাস করার জন্য পর্যাপ্ত রুম নেই। বৃষ্টি হলে সবই ডুবে যায়। সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারে না তারা।
ভবন না থাকায় শিক্ষকদের এমপিও আবেদনসহ কলেজের সার্বিক উন্নয়নও বন্ধ আছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
অর্থনীতি প্রভাষক শর্মী চাকমা বলেন, ‘ক্লাসরুম আমাদের খুবই কম। আমরা চাইলেই বাচ্চাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্লাস সুবিধা দিতে পারি না।’
রাঙামাটি পাবলিক কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু কাউছার বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে আমাদের স্বীকৃতি পেতেও অনেক সময় লেগেছে। কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে আমরা টিন দিয়ে ক্লাস তৈরি করেছি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তবে দ্রুত নতুন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘এ কলেজের ভবন তৈরির জন্য আমরা কাজ করছি। আপনারা জেনে খুশি হবেন নতুন অর্থবছরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নতুনভাবে ভবন নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হবে।’
অবকাঠামো সংকটে বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়াই মানবিক আর ব্যবসায় শিক্ষায় ৪৬৭ জন শিক্ষার্থী ও ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী দিয়ে চলছে রাঙামাটি পাবলিক কলেজের কার্যক্রম।