তানিয়া বেগম, মাত্র ১৫ বছর বয়সে শরীরে বাসা বেধেছে ডায়াবেটিস। মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত তিনি। অল্প বয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তিত পরিবারের অভিভাবকরাও। রোগী তানিয়া বলেন, ‘ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেছি তখন ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে।’
শুধু তানিয়া নন, গত কয়েক বছরে সিলেটে শিশু-কিশোরদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। তথ্য বলছে, গত এক বছরে প্রায় অর্ধশত শিশু-কিশোর চিকিৎসা নিয়েছেন সিলেট ডায়াবেটিস হাসপাতালে। এর মধ্যে অনেকে এন্ডোক্রাইন ডিসঅর্ডার, হরমোনাল ইমব্যালেন্স এমনকি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু-কিশোরদের নিয়মিত শরীরচর্চার অভাব, খেলাধুলার সুযোগ না থাকা, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে দ্রুত বাড়ছে ডায়াবেটিস। যার ফলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স আর সেটিই টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. একে এম জিয়াউল হক বলেন, ‘এ অনিয়মিত জীবন ব্যবস্থাই বাচ্চাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ।’
সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের কারণ ও লক্ষণ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নীহারেন্দু দাস বলেন, ‘যারা শরীরচর্চা কম করে, অতিরিক্ত ওজন এদের ক্ষেত্রে টাইপ-২ র প্রবণতা বেশি।’
শারীরিক নানা সমস্যার পাশাপাশি শিশুরা মানসিকভাবে যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজকেও সচেতন হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাইকোলজিষ্ট ফজিলাতুননেছা শাপলা বলেন, ‘মানুষিক সমস্যা হলে কেউ চিকিৎসকের কাছে যেতে চায় না। আমার ধারণা ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও এমন বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হতে পারে।’
ডায়াবেটিস এডুকেটর ও পুষ্টিবিদ,সিলেট ডায়াবেটিস হাসপাতাল স্বর্ণালী দাস বলেন, ‘নিয়ম মেনে চলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গ্রামে মানুষরা বোঝে না তা থেকে অন্য সমস্যা হয়।’