রেগুলেটরের প্রভাবে বদলাচ্ছে নাটোরে নদীর রেখাচিত্র

নাটোরের খালের চিত্র
পরিবেশ ও জলবায়ু
এখন জনপদে
0

পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেগুলেটরের প্রভাবে উত্তরের জেলা নাটোরে তিলে তিলে মানচিত্র থেকে উঠে যাচ্ছে নদীর রেখাচিত্র। পানি নিয়ন্ত্রণের নামে মরা খালেও বসানো হচ্ছে হাইড্রোলিক রাবার ড্যাম। সব মিলিয়ে যেন নদী মারার আয়োজন জোরেশোরে।

নাটোর সদর উপজেলার লেঙ্গুরিয়া এলাকা। এক সময়ের খরস্রোতা নারদ নদকে সংকুচিত করে বসানো হয় দুই কপাটের এ রেগুলেটর। উদ্দেশ্য নারদের পানি নিয়ন্ত্রণ করা। তবে হয়েছে উল্টোটা নদের দু’পাড় পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।

স্থানীয়রা জানান, সুইচগেটটি কোনো উপকারেই আসেনি। বড় নদটি আরও ছোট হয়ে গেছে।

নাটোর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী গদাই নদী, পানি প্রবাহ না থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড রেগুলেটর দিয়ে এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে পানি। ফলে নদীর দু’পাড়ে জমেছে কচুরিপানা। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নদী না ডোবা।

এবার কামার দিয়ার রাজাপুর ছোট এ খালে বসানো হচ্ছে হাইড্রোলিক রাবার ড্যাম। এতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ব্যয় করবে অন্তত ৩ কোটি টাকা। যেখানে পানিই থাকে না, সেখানে পানি সংরক্ষণে মরা খালে কেন এমন আয়োজন, সেই প্রশ্ন স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা জানান, মোটামুটি ২২ বিলের পানি নামে নদী দিয়ে। যতটুকু পানি প্রয়োজন বিলে ততোটুকু পানি রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:

তবে নদীর পানি প্রবাহের গতিধারায় এসব রেগুলেটরের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও যেখানে নদীই বাচতে পারছে না, সেখানে নতুন-পুরাতন রেগুলেটর কতোটা দরকার, এমন প্রশ্ন পরিবেশবিদদের।

নাটোর বেলা নেটওয়ার্ক সদস্য মেহনাজ মালা বলেন, ‘যেখানে সুইচ গেটগুলোর প্রয়োজন নেই, সেখানে গেটগুলো অপসারণ করব। আর নতুন সুইচ গেটের কথায় বলব, আমাদের মনে হয় না এখানে নতুন কোনো সুইচ গেটের প্রয়োজন আছে। কারণ আমাদের নদীতে পানি নেই, নদীতে সেই নব্যতা নেই।’

তবে, এরইমধ্যে বড়াল নদী থেকে রেগুলেটর সরানোর কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাছাড়া, সম্ভাব্যতা যাচাই করে অপ্রয়োজনীয় রেগুলেটর সরানোর আশ্বাস পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাত করিম বলেন, ‘আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন রেগুলেটর সমূহ বিভিন্ন সময়ে অনেক আগে নির্মিত। কোনটির প্রয়োজনীয়তা কেমন এটি নিয়ে আমাদের স্টাডি হয়েছে। রেগুলেটর নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। এ রিপোর্টগুলোর প্রেক্ষিতেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা দূর করার পাশাপাশি যেখানে সেখানে রেগুলেটর নির্মাণ বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি পরিবেশকর্মীদের।

এফএস