বিষখালী নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন শত শত পরিবার

নদী ভাঙনের চিত্র
এখন জনপদে
0

বরগুনায় বিষখালী নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হচ্ছে একের পর এক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। পৈতৃক ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন শত শত পরিবার। পাউবো বলছে, জেলার প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিষখালী নদীর চার দফা ভয়াবহ ভাঙনে সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব জাহাঙ্গীর খন্দকার। একসময় যার বাপ-দাদার জমি ছিলো প্রায় ১৩০ একর। সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। চার সন্তান নিয়ে নলটোনায় সামান্য যে জমিতে এখন থাকেন সেটুকুই তার শেষ সম্বল। তবে সেটিও আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে নদীতে বিলিন হওয়ার শঙ্কায় কাটছে প্রতিটি রাত।

জাহাঙ্গীর খন্দকার জানান, সবই চলে গেছে পানির নিচে। বেচা কেনা করলেও মানতে পারতাম কিন্তু এখানে তো সবই গেছে পানির নিচে।

শুধু জাহাঙ্গীর খন্দকার নন, ভিটেমাটি হারিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বহু সচ্ছল পরিবার। বিষখালী নদীর তীব্র ভাঙনে একের পর এক বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও স্থাপনা চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে।

আরও পড়ুন:

স্থানীয়রা জানান, এলাকার মানুষ একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টা আরও দেখভাল করলে ভালো হতো।

গত কয়েক বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিলেও তীব্র স্রোত ও ভৌগোলিক পরিবর্তনে সেসব বাঁধ টেকসই হচ্ছে না। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বারবার প্রতিরক্ষা বাঁধ দেয়ার পরও থামানো যায়নি ভাঙন। তাই বসতবাড়ি ও ফসলি জমি বাঁচাতে মজবুত বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

তারা জানান, এলাকায় কত জমি কেনা যায়? সবাই দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক জায়গায় কথা বলে হয়েছে কিন্তু কোনো উপকার হচ্ছে না।

বিষখালী নদীর দুই তীরের ৪৪ কিলোমিটার এলাকা তীব্র ভাঙন কবলিত হিসেবে চিহ্নিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হান্নান প্রধান বলেন, আমরা আশা করছি বিষখালী নদীর ডান তীরে এবং বাম তীরে যে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলো আছে স্থায়ীভাবে রক্ষণের উপস্থাপনা দাখিল করবো। সরকার যদি অনুমতি দেয় আমরা আশা করি এ জায়গার মানুষ এবং জান মালের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করতে পারবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনায় ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় ৫০ কিলোমিটার বাঁধ এখন চরম ঝুঁকিতে। স্থানীয়দের দাবি, ভাঙন ঠেকতে শুধু আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতি নয়, তারা চায় কাজের বাস্তবায়ন।

ইএ