হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দেয়ায় কামরুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। চায়ের সাথে নেশাদ্রব্য খাইয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় রুজু হয়েছে হত্যা মামলা।
এ ঘটনায় জড়িত থাকা প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে কাউখালী থানা পুলিশ। সকালে কামরুলের দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকেই মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার অভিযান এলাকায় ভিড় করেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত কামরুলের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এসময় কামরুলসহ হত্যায় জড়িত সকলের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে গত ৭ জুলাই বিকেলে অপহৃত হন মো. মামুন। পরে মামুনের স্ত্রীর কাছে ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ পরিশোধে পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রামের রাণীরহাট এলাকায় আনোয়ার (২০) নামের এক ব্যক্তির কাছে দুটি চেক পাঠান মামুনের পরিবার।
এ চেকের সূত্র ধরে আনোয়ারকে আটকের পর উঠে আসে অপহরণের সাথে জড়িত মামুনেরই সাবেক কর্মচারী কামরুলের নাম। পরে মামুনের স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়রি ধরে কাউখালী থানা পুলিশ কামরুল ইসলামের স্ত্রী সাথী আক্তারকেও আটক করে।
কামরুলের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানায়, মামুনকে পার্শ্ববর্তী রানীরহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় চায়ের সাথে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়। এরপর কামরুল ও তার স্ত্রী মিলে মামুনকে হত্যা করে। পরে লাশ দ্বিখণ্ডিত করে বস্তায় ভরে কাউখালীর মাঝের পাড়া এলাকায় নিজের ফুফা শশুরের বাড়ির পাশে পাহাড়ে মাটিতে পুঁতে রেখে পালিয়ে যায়।
মো. মামুন কাউখালীর কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকার আলী আহম্মেদের একমাত্র সন্তান। মামুনের আট ও তিন বছর বয়সী দুই ছেলে এবং নয়মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
আর গ্রেপ্তার হওয়া কামরুল ইসলাম মামুনের সাবেক কর্মচারী ও একই ইউনিয়নের ডাব্বুনিয়া এলাকার সেলিম সওদাগরের ছেলে। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম বলে, ‘এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া কামরুলকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি জানান, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এরইমধ্যে কামরুলের স্ত্রী সাথী আক্তার ও চেক গ্রহণকারী আনোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।