টেকনাফে অপহরণের ৪ দিন পর দুই কৃষক ও এক কিশোর মুক্ত

কক্সবাজার
অপহরণকারীদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়া এক ব্যক্তি ও কিশোর
এখন জনপদে
অপরাধ
0

কক্সবাজারের টেকনাফে দুই কৃষক ও প্রতিবন্ধী এক কিশোরকে অপহরণের চারদিন পর পুলিশের অভিযানের মুখে ছেড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উদ্ধার হওয়া তিনজন হলেন-এলাকার মো. আবদুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩২), মো. কালু সওদাগরের ছেলে মোহাম্মদ ভুট্টো (৪৫) ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে রাহমত উল্লাহ হন্যায়া মিয়া (১৪)।


আজ (রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬ টার দিকে অপহৃত তিনজনকে পাহাড়ের জমিদারঘোনা নামক এলাকায় ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

চারদিনের মাথায় পুলিশের অভিযানের চাপের মুখে তাদের ফেলে অপহরণকারীরা পালিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ আহমেদ এবং বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক দূর্জয় বিশ্বাস।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালীপাড়ার পাহাড়ি এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই তিনজনের পরিবার থেকে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় অপহরণকারীরা।

তবে গতকাল শনিবার রাতে মুক্তিপণের টাকা কিছুটা কমিয়ে মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ ভুট্টোর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ও রাহমত উল্লাহ হন্যায়া মিয়ার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে মোহাম্মদ আলী, বেলা ১১টার দিকে মোহাম্মদ ভুট্টোকে অপহরণ করা হয়। তারা দুজন প্রতিদিনের মতো কৃষিকাজে গিয়েছিলেন। পরে দেড়টার দিকে তিন কিশোরকে অপহরণ করা হয়। এরমধ্যে দুজনকে মারধর করে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি পরে পুলিশকে জানানো হয়েছিল।’

ইউপি সদস্য হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘শুরুতেই তিনজনের পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার রাতে আবার ফোন করে কিছুটা মুক্তিপণ কমিয়ে মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ ভুট্টোর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ও রাহমত উল্লাহ হন্যায়া মিয়ার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকাসহ ১৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে পুলিশ ঘটনার শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযান চালান। পুলিশের অভিযানের চাপের মুখে অপহৃত তিনজনকে পাহাড়ের জমিদার ঘোনা নামক এলাকায় ফেলে রেখে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।’

জানতে চাইলে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক দূর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযানের চাপে পড়ে তিনজনকে ছেড়ে পালিয়েছে অপহরণকারীরা।’

টেকনাফে অপহরণের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্যমতে গত ১৯ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৬০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছে।

সর্বশেষ গত ১৮ আগস্ট সকালে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকা থেকে মাহমুদুল হক নামের একজন মাছ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। এর পাঁচ দিন পর ১ লাখ ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মুক্তি পান তিনি।

এএইচ