শুরুতে শ্রমিক নেতাকে মারধরে প্রতিবাদে শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এ ছাড়া, এনসিটি টার্মিনাল বিদেশিদের দেয়ার প্রতিবাদে প্রতিদিনই চলছে মিছিল-মিটিং। সবশেষ রাজস্ব বোর্ড বিভক্তির প্রতিবাদের কাস্টমস কর্মকর্তাদের কয়েকদিনের কর্মবিরতি। সব মিলিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বন্দরে, ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস কার্যক্রম। এরই বন্দরে জমেছে প্রায় ৪২ হাজার টিইইউস কনটেইনার।
ঈদের আগেই বন্দরের এমন কনটেইনার জটে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। কারণ ঈদের ছুটিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় পণ্য আমদানি-রপ্তানির চাপ বাড়ে কয়েকগুন। অথচ তার আগেই জেটিতে ধীরগতির কারণে বহি নোঙরে ৪ থেকে ৫ দিন ধরে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় থাকছে জাহাজগুলো। এ অবস্থায় দ্রুত পণ্য ডেলিভারি নিতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আমদানিকারকদের বারবার তাগাদা দিচ্ছি যেন তারা তাদের কনটেইনার কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স নিয়ে দ্রুত ছাড় করে নিয়ে যায়। যেন ঈদের সময় কোনো ধরনের পণ্য ঘাটতি বাজারে না হয়।’
ঈদের ছুটিতে আমদানি পণ্য ডেলিভারি ও রপ্তানির স্বার্থে কাস্টমস এবং বন্দরে ব্যাংকের কিছু শাখা ৩ দিন খোলা থাকবে। তবে এসময় অধিকাংশ শিল্প কারখানা বন্ধ থাকায় পণ্য জট কমাতে তা খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন ব্যবহারকারীরা।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানির যে ইন্ডাস্ট্রিগুলো আছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তারাও কিন্তু এই বন্দর উপভোগ করতে যাচ্ছে। আমদানি পণ্য গ্রহণ বা রপ্তানি পণ্য পাঠানোর যে প্রক্রিয়াটা আছে, সেটিও কিন্তু আগের মতো স্বাভাবিক থাকবে না।’
এ অবস্থায় ঈদের আগে পণ্য ডেলিভারি নিতে বন্দর ও কাস্টম কর্মকর্তাদের আন্তরিক সহযোগিতা চান সিএন্ডএফ এজেন্টরা। একইসাথে শিপিং এজেন্ট ও ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারদের অফিস খোলা রাখার আহ্বান তাদের।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘শিপিং এজেন্ট থেকে আমাদের ডেলিভারি অর্ডার নিতে হবে। ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারদের থেকে এনওসি নিতে হবে। উনাদের অফিস যেন হুট করে দুপুরে বন্ধ হয়ে না যায়, উনারা সময় নিয়ে অফিস করবেন যেন আমরা এগুলো করতে পারি। এরপর আমরা যাবো ডেলিভারি নিতে। ডেলিভারিতে কাস্টমস এবং বন্দর দুদিকেরই কর্মকর্তা, কর্মচারী প্রয়োজন হয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেনার ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫৪ হাজার টিইইউএস। প্রতিদিন গড়ে ডেলিভারি হয় চার থেকে সাড়ে চার হাজার। ঈদের ছুটিতে ডেলিভারি হয় মাত্র ৫০০ থেকে এক হাজার টিইইউএস। ফলে কনটেইনার রাখার স্থান সংকুলানে সমস্যা ও অপারেশনাল কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।