ইউনেস্কো স্বীকৃতির পর চাহিদা বাড়লেও সংকটে টাঙ্গাইল শাড়ি উৎপাদন

টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করছেন
এখন জনপদে
0

ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার পর বাজারে বেড়েছে টাঙ্গাইল শাড়ির চাহিদা। তবে ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় কারিগর সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শাড়ির উৎপাদন। এতে শিল্পটির বাজার ধরে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে সরকারের সহযোগিতা চান প্রান্তিক কারিগররা।

ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় ২০০ বছর পর আন্তর্জাতিক বাজারের সম্ভাবনা

২৫০ বছর আগে ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে শাড়ি তৈরির কারিগররা রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জে কাজ শুরু করে। এরপর তারা কিশোরগঞ্জ, ঢাকার তাঁতিবাজারসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সব অঞ্চলে মানসম্মত শাড়ি তৈরি না হওয়ায় একটি অংশ পাথরাইলে এসে কাজ শুরু করে। পরে টাঙ্গাইল শাড়ির ঐতিহ্য ছড়িয়ে পরে।

টাঙ্গাইলে শাড়ি তৈরির ইতিহাস বেশ পুরনো। ২৫০ বছর আগে ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে শাড়ি তৈরির কারিগররা রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে কাজ শুরু করে। এরপর তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ওই সব অঞ্চলে মানসম্মত শাড়ি তৈরি না হওয়ায় তারা কাজ শুরু করে টাঙ্গাইলের পাথরাইলে। এরপর বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইল শাড়ির ঐতিহ্য।

৯ ডিসেম্বর বিকেলে ভারতের নয়াদিল্লিতে ইউনেস্কো রিপ্রেজেন্টেটিভ লিস্ট অব ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি অনুষ্ঠানে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’কে বুনন শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। তবে, ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় দেখা দিয়েছে কারিগর সংকট।

বুনন শিল্পীরা জানান, তাদের এ পেশায় থেকে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। কম মুজুরিতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বীকৃতির পর শাড়ির চাহিদা বাড়লেও তাঁতিদের পেশা বদলে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। সরকারের সহযোগিতা পাওয়া গেলে শাড়ির আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

আরও পড়ুন:

ব্যবসায়ীরা জানান, যারা কাজ করে তাদের যে পারিশ্রমিক দেয়া হয় সে পারিশ্রমিকে সংসার চলে না। ব্যবসায়ীদের আশা এ স্বীকৃতির মাধ্যমে তাদের ব্যবসায় আরও ভালো হবে।

টাঙ্গাইল জেলা তাঁত শাড়ি ব্যবসায়ী রঘুনাথ বসাক বলেন, ‘আশা করি ব্যবসায় আমাদের ভালো হবে। আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারব। যদি সরকারের সহযোগিতা থাকে তাহলে আর বেগবান হবে।’

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক বলেন, ‘আমরা যে ম্যাটেরিয়ালগুলো নিয়ে আসি বেশিরভাগই সবকিছু বাহিরের। গেগুলোও ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে ডাবল হয়ে যায়। খরচ অনেক বেড়ে যায়। বিক্রি করা কঠিন হয়ে যায় আমাদের মেশিনের শড়ির সঙ্গে।’

ঐতিহ্য আর গর্বের টাঙ্গাইল শাড়ি এখন বিশ্ব মঞ্চে এখন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। ইউনেস্কোর এ মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি শুধুই সম্মান নয়, এক নতুন আশার সংকেত। এ অবস্থায় রাখতে সংকট কাটিকে টাঙ্গাইল শাড়ির গুণগত মান ধরে রাখার দাবি সবার।

এফএস