সবুজ-শ্যামলিমায় মোড়ানো জাহাঙ্গীরনগরের ক্যাম্পাস। যেখানে বইছে ভোটের হাওয়া। ধীরে ধীরে বাড়ছে জাকসু নির্বাচনের উত্তাপ। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এরইমধ্যে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন প্যানেল ঘোষণা করলেও অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের মন জয় করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভোটের মাঠে এবার লড়বে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা না করলেও ছাত্রদলের ব্যানারে ভিপি পদে এগিয়ে আছেন ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হামীদুল্লাহ সালমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। আমরা ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক কাজ করেছি। শিক্ষার্থীরা জানে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অধিকার আদায়ে সবসময় কারা সোচ্চার ছিল এবং কারা ছিল না। সুতরাং এ ফিল্টারটা শিক্ষার্থীরাই করবে।’
অন্যদিকে, ছাত্রশিবির ঘোষিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়বেন মাজহারুল ইসলাম। যিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন:
মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মূল প্রায়োরিটি থাকবে ক্যাম্পাসের যে অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সেটিকে ফিরিয়ে আনা।
এসব নিরাপত্তার বাধা ও জঞ্জালকে আমরা শিক্ষার্থীরা উৎরে যেতে পারবো সবাই মিলে। এবং সুন্দর একটা জাকসু আমরা উপভোগ করতে পারবো, একটা সুন্দর নেতৃত্ব গঠন করতে পারবো।’
২৪'র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জল ভিপি পদে লড়বেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেল থেকে। মার্কেটিং বিভাগের এই শিক্ষার্থীর প্রত্যাশা, অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে জাকসুর ধারাবাহিকতা রক্ষা ও শিক্ষার্থীদের সংকট সমাধানে কাজ করা।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপরই রায় দিবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটভুক্ত হই নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের নিয়ে আমরা প্যানেল করার চেষ্টা করেছি। আমরা যদি ডাকসুতে নির্বাচিত হই, তাহলে আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা আরও বড় পরিসরে তৈরি হবে এবং কাজের পরিধিও বাড়বে।’
দলীয় প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাকসুতে লড়ছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের অন্যতম একজন সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের আব্দুর রশিদ জিতু। প্রত্যাশা গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারার বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণমূলক কাজই তার মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে যদি তারা জাকসুতে নির্বাচিত হন তারা কাজ করবেন। আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি রাজনৈতিক দলগুলোর অর্ন্তকোন্দলের ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে অস্থিরতা বিরাজ করতো, পেশিশক্তির রাজনীতি ছিল, গণরুম কালচার, গেস্টরুম কালচার ছিল। আমরা পুরনো এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে চাই।’