সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, পূর্বের বিধিমালায় একাধিক সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে নতুন চাহিদা, বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা যুক্ত করেই এবারের হালনাগাদ প্রণয়ন করা হয়েছে।
পূর্বের বিধিমালায় কেবল ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা প্রদান করা থাকায় সীমিত জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়নি। এজন্য নতুন বিধিমালায় ম্যাজিস্ট্রেটগণের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে (ট্রাফিক সার্জেন্টের নিচের পদ নয়)। ফলে, এখন যদি কোনো ব্যক্তি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সম্মুখে বিধি ৬ এর উপ-বিধি (২), (৩) বা (৪) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে উক্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলেই তাহাকে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবেন। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, এ উদ্যোগ শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে।
আরও পড়ুন:
বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়, শব্দ দূষণের অন্যতম বড় উৎস হর্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পূর্বের বিধিতে আমদানি, উৎপাদন, মজুত ও বিক্রি সংক্রান্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় তদারকিতে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল। শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত হর্ন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন বিধিমালায় আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সুরযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ; প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ; যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা; নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্ন বা অনুরূপ শব্দ সৃষ্টিকারী যেকোনো পণ্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; রাত্রিকালে নির্মাণকাজ বন্ধ; শিল্পকারখানা ও জেনারেটরের শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন; এবং সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।
উল্লেখ্য, সরকার অংশীজনদের নিয়ে সভা ও কর্মশালা শেষে খসড়া প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে সব মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ এবং জনগণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালায় থাকা দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয় এবং বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।





