চুলের যত্নে ডিম
অনেকেই চুলের যত্নে ডিম দিয়ে থাকেন। চুলের সঠিক বৃদ্ধি বা জেল্লা বাড়ানো— ডিম মাখলে দুটিই সম্ভব। মাথায় হেনা করার সময়ে অনেকেই ওই মিশ্রণে ডিমের সাদা অংশটি মিশিয়ে নেন। এ মিশ্রণ মাথায় মাখলে চুল জটমুক্ত থাকে, রেশমের মতো জেল্লাদার হয়। কিন্তু চুলের যত্নে ডিমের সাদা অংশ না কি কুসুম— কোনটি বেশি উপকারী?
চুলে ডিমের কুসুম মাখার উপকার
ডিমের হলুদ অংশটি অর্থাৎ কুসুমে ভরপুর মাত্রায় বায়োটিন রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন এ, ডি এবং ই রয়েছে। এসব উপাদান চুলের জন্য ভালো।
ডিমের কুসুমে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। যা মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং হেয়ার ফলিকল মজবুত করে তোলে।
আরও পড়ুন:
রুক্ষ, শুষ্ক চুল মোলায়েম করতে পারে ডিমের কুসুম। মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও এ উপাদানটির ভূমিকা রয়েছে।
চুলে ডিমের সাদা অংশ মাখার উপকার
চুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো প্রোটিন। ডিমের সাদা অংশে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে। যা ক্ষতিগ্রস্ত, নিষ্প্রাণ চুল রেশমের মতো করে তুলতে পারে।
ডিমের সাদা অংশে বিশেষ এক ধরনের উৎসেচক বা এনজাইম থাকে। যা মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে এবং অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেজন্য যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত, তারা এটি মাথায় ব্যবহার করলে তা কমে যেতে পারে।
ডিমের কিছু হেয়ার প্যাক
ডিম-টক দই
আরও পড়ুন:
একটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে এক কাপ টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এ হেয়ার প্যাক চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। প্রথমে পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে এরপর শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
ডিম-অলিভ অয়েল
ডিমের কুসুমের সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। কন্ডিশনার হিসেবে এ হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা যায়। শ্যাম্পু করে প্রথমে চুল থেকে পানি নিংড়ে নিতে হবে বা মুছে ফেলতে হবে। এবার এ হেয়ার প্যাক লাগনো যাবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আবার ধুয়ে ফেলতে হবে। এ হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলে চুল নরম হবে।
ডিম-মধু
চুল অতিরিক্ত শুষ্ক হলে ডিম আর মধু হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। দুটো উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। ঘণ্টা দুয়েক রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। এতে চুলে কোমলতা ফিরবে দ্রুত।
ডিম মাখার সঠিক পদ্ধতি
প্রথমত চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ডিমের সংখ্যা নির্বাচন করতে হবে। মাঝারি চুলে দুটি ডিম লাগবে।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় কাজ হবে ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম আলাদা করে নেয়া। কারণ তৈলাক্ত চুলের জন্য ডিমের সাদা অংশ ভালো। তবে চুল যদি রুক্ষ হয়, তাহলে কিন্তু বেশি কাজ দেবে ডিমের কুসুমই। তবে চুল যদি অতি রুক্ষ বা তৈলাক্ত কোনোটাই না হয়, সেক্ষেত্রে পুরো ডিম ব্যবহার করতে হবে। অবশ্য চুলের প্রকৃতি না জেনে ঠিক মতো ডিম ব্যবহার করতে না পারলে কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মিলবে না।
এরপর ডিমের দুই ধরনের অংশ পৃথকভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তৈলাক্ত চুল হলে শুধু সাদা অংশ আর রুক্ষ হলে কুসুম ব্যবহার করুন।
কীভাবে চুলে ডিম লাগাতে হয়
ভেজা চুলে ডিম মাখতে হবে। তবে চুল ঠান্ডা জলে নয়, হালকা গরম জলে ভিজিয়ে নিতে হবে। এতে চুলের কিউটিকল খুলে যাওয়ায় ডিমের পুষ্টি শোষণে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন:
মাথার তালু থেকে চুলের ডগা পর্যন্ত খুব ভাল করে ডিমের মিশ্রণ লাগিয়ে নিতে হবে।
ডিমের মিশ্রণ লাগানোর পর হালকা হাতে তালুতে মাসাজ করতে হবে। এতে প্রতিটি চুলে ডিমের অংশ ভালোভাবে মিশবে।
মাসাজের পর চুল শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা এভাবেই চুল রেখে দিন।
ঠান্ডা জল দিয়ে চুল খুব ভালো করে ধুতে হবে। গরম জল কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। তা হলে চুল রুক্ষ হয়ে যাবে। ডিমের অংশ চুলে যাতে না লেগে থাকে, সেজন্য মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।





