নোয়াখালীর সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন অনেকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে কিট সংকট, নষ্ট আরটিপিসিআর মেশিনও। এতে বিপাকে পড়ছেন রোগীরা।
রোগী ও স্বজনরা জানান, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হতো নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে। তবে মেশিন নষ্ট থাকায় উপসর্গ নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।
তারা জানান, এখানে মেশিন নষ্ট থাকায় কোন টেস্ট করা যাচ্ছে না। পরীক্ষা করাতে আসলে এরা বলে যে নোয়াখালীতে এখনো করোনা পরীক্ষা চালু হয় নি। পরীক্ষা চালু না হলে আমরা কিভাবে চিকিৎসা নিব।
২০২২ সালের পর থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে কোন রোগী না আসায় নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যায় নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির এমন অচলাবস্থা বলছেন ল্যাব সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানায়, দীর্ঘদিন এইসব ইলেক্ট্রিক যন্ত্রপাতি লাইট, ফ্যান এসব অকেজো অবস্থায় থাকার কারণে এগুলো মেরামত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এই মেশিনে ক্যালিব্রেশন প্রয়োজন। যদি ক্যালিব্রেশন ঠিক হয় তাহলে আমরা আবার করোনা পরীক্ষা করতে পারবো।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেশিন সচল করতে মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে।
নোয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাকে সিডিসি থেকে ফোন করেছে। কীট দিতে চাচ্ছে তারা। আমি বলেছি আমরা মেশিন ঠিক করার কাজ করছি। মেশিন ঠিক করার পর অবশ্যই কিট সংগ্রহ করে নোয়াখালীতে করোনা নির্ণয়ের কাজ শুরু করবো।’
এদিকে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার বিষয়ে কোন নির্দেশনা পায়নি জেলার একমাত্র ২৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল। সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিস্থিতির আলোকে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ল্যাবগুলো প্রস্তুত হয় নি। এজন্য আমরা এখনো করোনার পরীক্ষা শুরু করতে পারি নি। আমরা কীটের চাহিদা দিয়েছি, বিশেষ করে র্যাপিড এন্ডোজেন কীট। এটা পেলেই আমরা পরীক্ষার কাজ শুরু করবো।’
আর ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানান সিভিল সার্জন। নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ যীশু দাশ বলেন, ‘সংক্রমিত রোগীদের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইটাকে যদি এস্টাবলিশ করা যায় তাহলে হয়ত উপজেলা পর্যায়ের রোগীদের আমরা উপজেলাতেই সেবা দিতে পারবো।’
শিগগিরই অচল মেশিনগুলো সচল ও কিট সরবরাহ করা না হলে রোগী শনাক্তের অভাবে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে করোনা-এমনটাই শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।