১৮ বছরের কিশোর আহসান আবীর। গেলো রমজানে কিশোর গ্যাংয়ের দু’পক্ষের মারমারিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। হকিস্টিকের আঘাতে মস্তিষ্কে গুরুতর রক্তক্ষরণ হয়। তখন সেই রক্ত অপসারণে মাথার খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়।
ভুক্তভোগীর মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেক ভয়ে ছিলাম। পরে ডাক্তার বলেছেন সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি যে কন্ডিশনের কথা বলেছেন বাস্তবে তা প্রমাণিত হয়েছে।’
প্রায় ছয় মাস আগে অপারেশনের পর তার মাথার খুলির একটি অংশ খুলে রাখা হয় মেডিকেলের ফ্রিজে। তবে মাথার খুলি ছাড়াই স্বাভাবিক মানুষের মতোই জীবনযাপন করছেন আবীর। খাওয়া দাওয়া, নিত্যদিনের কাজ সারতে তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি আবীরের।
আরও পড়ুন:
ভুক্তভোগী আহসান আবীর বলেন, ‘আমার মাথার খুলি খোলার পর দুই সপ্তাহের মতো আমি অস্থির ছিলাম। আমার এখন ছয় মাস চলছে। আলহামদুলিল্লাহ এখন ভালো আছি। এর ফলে আমার বিশেষ কোনো সমস্যা হয়না। আমি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি।’
চিকিৎসক জানান, গুরুতর এসব রোগীর খুলি খুলে রেখে তা ফ্রিজে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়। সাধারণত দুই মাসের মাথায় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করে খুলি প্রতিস্থাপন করা যায়। তবে আবীরের গলায় ভিন্ন একটি রোগের অস্ত্রপচার করায় এক্ষেত্রে সময় বেশি লেগেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘মাথার খুলি খুলে রাখা আবার প্রতিস্থাপন করা এটি হয়। প্রতি মাসে আমরা চার থেকে পাঁচটি এমন অপারেশন করে থাকি। অনেক সময় কৃত্রিম মাথার খুলিও প্রতিস্থাপন করা হয়।’
গত মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করে আবীরের খুলি আবারও প্রতিস্থাপন করা হয়। সব ঠিক থাকলে সে এবার নগরীর একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’— সম্প্রতি জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার এমন ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মাথার খুলি খুলে রাখার পর সতর্কতা হিসেবে সাদা ব্যান্ডেজে এটি লিখে দেন। চিকিৎসকরা জানান, মামুন মিয়ার মাথার খুলিও দুই থেকে তিন মাস পর প্রতিস্থাপন করা হবে।