সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ত নগরী মোসাফফা। শিল্প এলাকাটি মূলত আবুধাবির উপশহর। আঁকাবাঁকা সড়ক আর অলিগলি জুড়ে আছে নামিদামি গাড়ি মেরামতের প্রতিষ্ঠান। যতদূর চোখ যায় নজরে আসে সড়কে ঘেঁষে থাকা সারি সারি গাড়ি। আছে গাড়ির যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের প্রতিষ্ঠানও। যেখানে জড়িয়ে আছে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশির জীবিকা।
প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলেন, ‘আমাদের মোসাফফা শহরে বাঙালি যারা আছে সবাই ভালো অবস্থানে আছেন। টাকা পয়সা ইনকাম করে আমরা ভালো ব্যবসা বাণিজ্য করছি। আমাদের কাজের পরিধি বেড়েছে। গ্যারেজ বেড়েছে, শ্রমিক সংখ্যাও বেড়েছে। শ্রমিকদের বেতন আছে এখানে মিনিমাম ১৫০০ থেকে ২৪০০ এমনকি ২০০০ থেকে ৩০০০ পর্যন্তও আছে। আমাদের বাঙালিদের ব্যবসা বাণিজ্য বেড়ে গেছে। সবাই ভালো আছে এখন, খুশী আছে।’
আমিরাতজুড়েই মোসাফফা শহরটি বেশ জনপ্রিয়। দীর্ঘদিন এই পেশায় জড়িত থাকা প্রবাসীরা দেখেছেন এই নগরের উত্থান। অনেকেই বংশ পরম্পরায় ধরে রেখেছেন গাড়ি মেরামতের ব্যবসা। উদ্যোক্তা থেকে হয়েছেন সফল ব্যবসায়ী।
মেরামতের পাশাপাশি এই এলাকাটি গাড়ির পুরাতন যন্ত্রাংশের জন্যও প্রসিদ্ধ। জমজমাট এই ব্যবসায় বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেলো গাড়ির পুরনো যেকোনো যন্ত্রাংশই পাওয়া যায় এখানে। হোক সেটা দামে কম কিংবা বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘যথেষ্ট পরিমাণ বিক্রি হয় এখানে। আর বেশিরভাগই আমাদের বাঙালিরাই এখানে দোকানদার। খুলনা, চট্টগ্রাম বিভিন্ন বিভাগের মানুষ এখানে ব্যবসা করে যাচ্ছে।’
গরমের তাপমাত্রা বাড়লে এসব প্রতিষ্ঠানে কাজের চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি বাড়ে শ্রমিকদের ব্যস্ততা। ভিনদেশিদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখানে কাজ করেন বাংলাদেশিরা। প্রতিষ্ঠান মালিকরা বলছেন, একেকজনের দেখাদেখি অন্যরাও এই কাজে অভিজ্ঞ হয়ে উঠে। দক্ষ ও অভিজ্ঞদের সারাবছরই চাহিদা থাকে।
কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, ‘ভিসা ও খাওয়া মালিকের। ভিসা খোলা থাকলে আমাদের আরও লোক নেয়া দরকার ছিলো।’ প্রতিষ্ঠান মালিক বলেন, ‘গরমের সময় কাজের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু যারা নিজের দক্ষতা দিয়ে কাজ করে তাদের জন্য কাজের অভাব হয় না।’
আবুধাবির এই শিল্প এলাকাটি গাড়ি মেরামত ও যন্ত্রাংশের জন্য যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে বছরের পর বছর অর্থনৈতিকভাবে নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন বাংলাদেশিরা।