১৯৭২ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অভিষেক। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৫২ জন কাউন্সিলর ও চারজন এমপির মন্ত্রীত্ব মুখ উজ্জ্বল করে প্রবাসীদের, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক ও রুশনারা আলী।
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি মন্ত্রিত্ব হারান টিউলিপ সিদ্দিক। সম্প্রতি একই পথে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলীও।
নিজের মালিকানাধীন একটি টাউনহাউস থেকে ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করে একলাফে বাড়ি ভাড়া ৭০০ পাউন্ড বাড়িয়ে দেন তিনি। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে গেলো বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) পদত্যাগ করেন রুশনারা, যার প্রভাব পড়েছে যুক্তরাজ্যের বাঙালি কমিউনিটিতে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘গৃহহীনদের মন্ত্রী হয়ে তিনি মানুষকে গৃহহীন করার জন্য যে কাজটি করেছেন তা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। বাংলাদেশি হিসেবে এখানকার মানুষ তাকে বারবার নির্বাচিত করেছে। তাদের প্রত্যাশা ছিল একটাই, তিনি ন্যায়ের পক্ষে থাকবেন।’
আরও পড়ুন:
লন্ডনের বাংলাদেশি–অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রিন ও স্টেপনি আসনে ২০১০ সাল থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা। গত বছর লেবার পার্টি সরকার গঠন করলে তিনি গৃহহীনবিষয়ক মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পান।
যুক্তরাজ্যের সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, ‘রুশনারা হয়তো ভুল বুঝতে পেরেছেন, অথবা মনে করেছেন যে দলের জন্য এটা ক্ষতিকর হবে। তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন। তার মানে এটা নয় যে, তিনি খুব বেশি দোষী।’
লন্ডনের রাজনীতিবিদ আনিসুর রহমান আনিস বলেন, ‘তার রেজিগনেশন লেটারে কিন্তু তিনি পরিষ্কারভাবে সবকিছু বলেছেন এবং আপনারা জানেন যে তিনি গত ১৫ বছর যাবৎ নির্বাচিত এমপি এবং মন্ত্রীও ছিল। তাছাড়া তিনি আমাদের কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যুতে সবসময় কমিউনিটির পক্ষেই ছিলেন।’
এমপি হিসেবে বেসরকারি মালিকদের মাধ্যমে ভাড়াটে শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন রুশনারা। ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা গর্বের সঙ্গে এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা লাখো প্রবাসীর।