ইসরাইলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। সবশেষ বৃহস্পতিবার গাজার মধ্যাঞ্চলে আল-নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে এবং উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের ট্রাকের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর বিমান হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ২৯ জনকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইসরাইলের রক্তক্ষয়ী আগ্রাসন। এ আগ্রাসনে নারী-শিশুসহ ৩২ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। সন্ত্রাস নির্মূলের নামে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যালীলা চালিয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের চক্ষুশূল হচ্ছে দেশটি। যদিও কোনোভাবেই চাপ আমলে নিতে রাজি নন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ।
তিনি বলেন, ‘রাফায় আমাদের প্রবেশ ঠেকাতে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেসব চাপ আমলে নিচ্ছি না। আমাদের পাঁচ মাসের অভিযান সফলতার দিকেই এগোচ্ছে। ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ এটি। রাফায় প্রবেশ করে হামাসকে নির্মূল করবো, ইসরাইলের চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করবো এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনবো।’
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে দাঁড়িয়ে বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চাক শুমার। ইসরাইলে নতুন নির্বাচনেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু প্রশাসনের তোপের মুখে শুমারের বক্তব্যের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি শিথিল হতে শুরু করার পরও যদি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বর্তমান জোট সরকার ক্ষমতায় থাকে এবং বিপজ্জনক ও উসকানিমূলক নীতি অব্যাহত রাখে, তাহলে ইসরাইলের নীতি সংশোধন ও চলমান পরিস্থিতিতে বদল আনতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় থাকবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের পমার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বছরের পর বছর অনেকবার ইসরাইলে সফর করেছেন সিনেটর শুমার। তিনি যে নিজের মত প্রকাশে দ্বিধা করেন না, ইসরাইলেরও তা বুঝার কথা। অবশ্যই শুমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে আমাদের, কিন্তু তার বক্তব্য একান্তই তার নিজের।’
এদিকে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইলকে চাপে ফেলতে লোহিত সাগরে হামলা অব্যাহত রেখেছে হুতি বিদ্রোহীরা। হুতিদের দমনে ইয়েমেনের বন্দরনগরী হুদাইদার বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার পাঁচ দফা বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।