ভারতের সব বোয়িং নিরীক্ষার নির্দেশ নয়াদিল্লির

এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং
বিদেশে এখন
0

বিমান দুর্ঘটনার পর ভারতের কাছে থাকা বোয়িংয়ের সব বিমান নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি। এছাড়া, চলতি সপ্তাহেই বিমান বিধ্বস্তের কারণ জনসম্মুখে তুলে ধরার কথা বলেন দেশটির বিমান পরিবহনমন্ত্রী। এখনো চলছে বিমান অপসারণ ও নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ২৫ লাখ রুপি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।

বৃহস্পতিবার ভারতের আহমেদাবাদে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। ক্রেন দিয়ে সরানো হচ্ছে মেডিক্যাল হোস্টেলের ছাদে আটকে থাকা বিমানটির লেজের অংশ। খুবই সতর্কতার সঙ্গে তা অপসারণ করা হচ্ছে। যাতে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কোনো আলামত নষ্ট না হয়। এরইমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তদন্তকারী এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই হোস্টেলের ছাদে মিলেছে বিধ্বস্ত বিমানের একটি ব্ল্যাক বক্স। তা বিশ্লেষণ করে চলতি সপ্তাহেই বিমান দুর্ঘটনার কারণ জনসম্মুখে প্রকাশ করার কথা জানিয়েছে ভারতের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, ভারতের অধীনে থাকা ৩৪টি বোয়িং ৭৮৭ মডেলের বিমানগুলো পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির বিমানমন্ত্রী।

ভারতীয় বিমান পরিবহন মন্ত্রী রামমোহন নাইডু বলেন, ‘অত্যন্ত কঠোর প্রটোকলের মধ্যে সব ধরনের কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া, দুর্ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের ওপর বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে এরইমধ্যে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারতীয় বিমান বহরে বোয়িংয়ের ৩৪টি বিমান রয়েছে। এরমধ্যে ৮টি নিরীক্ষা করা হয়েছে। দ্রুতই বাকিগুলো নিরীক্ষা করা হবে।’

পশ্চিম লন্ডনের একটি মন্দিরে জড়ো হয়ে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা করেন গুজরাটি সম্প্রদায়ের সদস্যরা। ভাই-বোন ও স্বজনদের হারিয়ে তারা মর্মাহত। এদিকে, নিহত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ প্যাটেলের পরিবার আহমেদাবাদে পৌঁছেছে। প্রতি বছরই শিকড়ের টানে একবার ভারতে আসতেন প্যাটেল।

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা রমেশ প্যাটেল ৪ জুন, মাত্র ৯ দিনের জন্য ভারতে এসেছিলেন। তিনি ভারতের জাম্বুরা খেতে অনেক পছন্দ করতেন। বিমানে ওঠার আগমুহূর্তেও তিনি ফোনে কথা বলেছেন আমাদের সঙ্গে। আমিও তাকে ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছি। বাড়িতে তার পছন্দের খাবারও রান্না করে রেখেছিলাম।

এদিকে, বিমান দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার প্রতি ১ কোটি রুপি করে দেয়ার ঘোষণা দেয় টাটা গ্রুপ। এবার হতাহত পরিবারকে অতিরিক্ত ২৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলেছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।

এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন বলেন, ‘নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের খোঁজ খবর রাখছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। হতাহত পরিবারের সহায়তায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে সবাই। সবাইকে আর্থিক ও মানসিকভাবে সহায়তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।’

গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে ভারতের আহমেদাবাদে। ২৪২ আরোহী নিয়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি উড্ডয়নের কিছু সময় পরই বিধ্বস্ত হয়। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান একজন যাত্রী।

এএইচ