সল্টলেকে মেসির এক ঘণ্টার সফর আয়োজকদের খামখেয়ালিপনার কারণে শেষ ২০ মিনিটেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতার মেসির কাছে ক্ষমা চাওয়া, ক্রীড়ামন্ত্রীর পদত্যাগ কিংবা আয়োজক শতদ্রু দত্তের জেলে যাওয়া ছাপিয়ে এবার আলোচনায় টাকার হিসাব।
কুড়ি মিনিটে সফর শেষ হলেও মেসির সফরের জন্য আয়োজকরা খরচ করেছেন ১০০ কোটি রুপি, যার ৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল মেসির জন্য। বাকি ১১ কোটি টাকা কর দিতে হয়েছে সরকারকে। মোট টাকার ৩০ শতাংশ এসেছে পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে আর সিংহভাগ টিকিট বিক্রির টাকা থেকে। আয়োজক শতদ্রু জেলে যাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে এমনটাই।
আরও পড়ুন:
বিশাল অঙ্কে মেসির সময় কেনা হলেও সাধারণ দর্শকদের খুশির পরিবর্তে আয়োজকরা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন দীর্ঘশ্বাস। ৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকার টিকিট কেটে এক পলক মেসিকে দেখতে আসা দর্শকদের কপালে জুটেছে পুলিশের লাঠি আর শৃঙ্খলার নামে অব্যবস্থাপনা। প্রভাবশালীদের ভিড়ে মেসি নিজেই বিরক্ত হয়ে ২০ মিনিটেই যখন মাঠ ছেড়েছেন, তখন হৃদয় ভেঙেছে গ্যালারিতে বসা হাজারো ভক্তের।
আয়োজক শতদ্রু জেলের ঘানি টানছেন। আদালতের নির্দেশে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়েছে। হাইকোর্টে চলছে টিকিটের টাকা ফেরতের লড়াই। টাকা হয়ত ফেরত পাওয়া যাবে, কিন্তু যে মানুষগুলো ঘাম ঝরানো টাকা দিয়ে হাজার মাইল দূর থেকে শুধু এক ঝলক মেসিকে দেখবেন বলে এসেছিলেন তাদের চোখের জলের দাম কে দেবে, স্বপ্নভঙ্গের ক্ষতিপূরণ কি আদৌ পাবেন তারা—এ প্রশ্নগুলো থেকেই যায়।
মেসির ভারত সফর শেষ হয়েছে। সফরটা হতে পারত আনন্দ উৎসবের। কিন্তু অব্যবস্থাপনা আর লোভের কারণে ঐতিহাসিক সল্ট লেক স্টেডিয়াম হয়ে থাকবে চিরস্থায়ী এক বিষাদের সাক্ষী, যেখানে হয়েছে হাজারো স্বপ্নের মৃত্যু। আসলেই আবেগের আর্থিক মূল্য হয় কি না, সে প্রশ্নের উত্তরও হয়তো থেকে যাবে ভক্তদের মনে।





