জেফরি এপস্টেইন ঝড়ে টালমাটাল ডোনাল্ড ট্রাম্পের মসনদ। প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক শিবিরের পাশাপাশি কুখ্যাত এই নারী নিপীড়কের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সম্পর্ক তুলে ধরতে চাপ দিচ্ছে কট্টর ডানপন্থি মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন বা মাগা শিবির। যাতে ক্ষুব্ধ হয়ে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ট্রাম্প।
ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল ও এর কর্ণধারের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই মানহানির মামলা ঠুকেছেন রিপাবলিকান এই নেতা। এপস্টেইন সম্পর্কিত মামলার আরও তথ্য প্রকাশে নির্দেশ দিয়েছেন বিচার বিভাগকে। দাবি করেন, এ ঘটনার পর পাহাড়সম উচ্চতায় পৌঁছেছে তার জনপ্রিয়তা।
তবে বিশ্লেষকদের দাবি ভিন্ন। তাদের ধারণা, মামলার নথি প্রকাশের ক্ষেত্রে ট্রাম্প সম্পর্কিত তথ্যগুলো প্রকাশ করা হবে না। নিজেকে বাঁচানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দায় চাপানো হতে পারে আদালতের ওপর। যার আন্দাজ পেয়েই ট্রাম্পের ওপর অসন্তুষ্ট মাগা সমর্থক গোষ্ঠী।
নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ব্রায়ান উজি বলেন, ‘আমি নথিগুলো প্রকাশ করবো। কিন্তু তিনি করবেন না। সমর্থকদের একত্রিত রাখতে এ কথা বললেও নথিগুলোয় আসল তথ্য অনুপস্থিত থাকবে। আমরা হয়তো অনেকগুলো পাতা দেখবো যেখান থেকে মূল তথ্যগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। পরবর্তীতে তিনি বলতে পারেন আদালত এর চেয়ে বেশি তথ্য প্রকাশ করতে দেয়নি।’
বছরের শুরুতেই এপস্টেইনের ক্লায়েন্টদের নাম প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডাই। অথচ গেলো মাসে ইউটার্ন নেন তিনি। এফবিআই এর সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে জানান নারী নিপীড়ক এপস্টেইনের গ্রাহকের তালিকা পাওয়া যায়নি। এসময় এপস্টেইনের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেও স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিশ্লেষকদের ধারণা, বিশ্বস্ত এই মাগা সমর্থক গোষ্ঠীকে ধরে রাখতে পাম বন্ডাইকে বরখাস্তের মাধ্যমে বলির পাঠা বানানো হতে পারে। এতে যুক্ত হতে পারেন এফবিআই শীর্ষ কর্মকর্তা কাশ পাটেল ও ড্যান বনজিনো।
কানসাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নাথানিয়েল বার্কহেড বলেন, ‘আমার ধারণা ড্যান বনজিনো, পাম বন্ডাই কিংবা কাশ পাটেলে অর্থাৎ বিচার দপ্তরের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মধ্যে কেউ পদত্যাগে বাধ্য হবেন। তাদের মধ্যে কাউকে বলির পাঠা বানানো হতে পারে।’
কিশোরীদের পাচার ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ২০০৮ সাল থেকেই নিউইয়র্কের একটি কারাগারে ছিলেন জেফরি এপস্টেইন। বিচার চলার সময়ে ২০১৯ সালে কারাগারেই অস্বাভাবিকভাবে মারা যান তিনি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো মার্কিন এপস্টেইনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ অসংখ্যবার তুলে এনেছে। যদিও ২০০৮ সালে আটক হবার পর এপস্টেইনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন ট্রাম্প। এমনকি এপস্টেইনের সঙ্গে কোনো অপরাধে জড়িত থাকার কথাও অস্বীকার করেন রিপাবলিকান এই নেতা।