ক্লাউডবার্স্ট বা মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক প্রাণহানির পর এবার প্রবল বৃষ্টির কবলে পড়লো দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী করাচি। স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তর জানায়, ভারতের গুজরাট এলাকার ওপর সৃষ্ট লঘু চাপের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে করাচিতে। এছাড়া, আরও দুই দিন এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয় শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় মুষলধারে বৃষ্টি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১৭০ মিলিমিটার পর্যন্ত।
নজিরবিহীন ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি তলিয়ে অচল হয়ে যায় করাচির জনজীবন। বৃষ্টিতে দেয়াল ধসে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন অন্তত ছয়জন। অতিরিক্ত পানির চাপে ভেঙে পড়েছে শহরের ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে নগরীর অভিজাত এলাকাও। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
করাচির প্রধান সড়কগুলোতে কোমর পানি। পানিতে ডুবে আছে শত শত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। পানির তোড়ে ভেসে গেছে বহু যানবাহন। যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা করাচি শহর। আটকা পড়েছেন হাজার হাজার বাসিন্দা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাতিল ও বিলম্ব করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। ভারী বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে নগরীর বহু এলাকা। এমন অবস্থায় বুধবার করাচিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এদিকে, ভারী বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্য। মুষলধারে বৃষ্টিতে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় মারা গেছেন ৪ জন। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস। তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা।
ভারী বৃষ্টিপাতে মুম্বাইয়ে দুটি মনোরেল ট্রেন বিকল হয়ে পড়ে। এতে আটকে পড়া ৭ শতাধিক যাত্রীদের আলাদা সিঁড়ি দিয়ে উদ্ধার করা হয়। ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে বিকল হয়ে পড়ে ট্রেনগুলো। এতে দেখা দেয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং বন্দরনগরী এডেনে ভারী বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। তলিয়ে গেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও দোকানপাট। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয় শহরজুড়ে।