মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি সপ্তাহে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয় পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে। সংবাদমাধ্যম ডন জানাচ্ছে, রাভি ও শতদ্রু নদীর পানি বেড়ে নতুন করে বন্যা সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে। শতদ্রু নদীর পানি এরইমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাভি নদীর পানিতে ওকারা, সাইহাল, টোবা টেক সিং এবং দক্ষিণের আরও কিছু প্লাবিত হতে পারে।
তবে শুধু ভারি বৃষ্টিপাত নয় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলকে পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যার জন্য দায়ী করছে ইসলামাবাদ। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারতের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত ও একটি ব্যারাজের গেট ভেঙে পড়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন:
পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, ‘যদি ইন্দাস পানি চুক্তি চালু থাকতো এবং আমরা তথ্য পেতাম, তাহলে আমরা প্রস্তুতি নিতে পারতাম। এটা শুধু দুই দেশের বিষয় নয় এটা মানবতার বিষয়।’
মাধোপুর ব্যারাজের দুটি গেট ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে ভারত সরকার। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে পানি ছাড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে দিল্লি।
এদিকে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের ঘটনায় ভারতের অবস্থাও নাজেহাল। শুক্রবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের রামবান জেলায়। হঠাৎ বাড়তেই থাকে বৃষ্টি, সাথে ভূমিধস। আর তাতেই ভেসে যায় ঘর-বাড়ি, রাস্তা ও সেতু। এ প্রাণহানির পাশাপাশি এখনো নিখোঁজ রয়েছে বেশ কয়েকজন। এছাড়া, বেশ কয়েকটি রাস্তা ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান। বন্ধ রয়েছে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক। মুঘল রোড দিয়ে সীমিত পরিসরে যান চলাচল চালু রাখা হয়েছে।
বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাতেই। জম্মু বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন সতর্কতায় উদ্বেগ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। সামনে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এ সপ্তাহে প্রবল মৌসুমি বৃষ্টিতে প্রতিবেশি ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।