নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা । অনাস্থা ভোটে হেরে গত সোমবার পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। গতকাল (মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর) নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের ঘনিষ্ঠ সেবাস্তিয়ান লেকোর্নুর নাম প্রস্তাব করেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যঁক্রো। এরপরেই দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেয় সাধারণ মানুষ।
‘ব্লক এভরিথিং’ বাংলায় যার অর্থ ‘সবকিছু বন্ধ করে দাও’। আজ (বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানী প্যারিসের সড়কে নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এতে যানজট সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজনকে সেখানে আটক করা হয়। গোটা দেশে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছে সরকার।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলোও সরকারের কঠোর বাজেট পরিকল্পনার প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। বিরোধীদলগুলো বলছে, ফ্রান্স এখন গভীর সামাজিক ও গণতান্ত্রিক সংকটে ডুবে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে গাড়িচালকদের। আন্দোলনকারীরা দেশে অচলাবস্থা তৈরি করতে চায় অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রায় এক লাখ মানুষ এতে অংশ নিতে পারে এবং সহিংসতার আশঙ্কায় পুলিশ প্রস্তুত থাকবে।
আগামী সপ্তাহে আরও সমন্বিত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। তারা বলছে, সরকারের বাজেট পরিকল্পনা অত্যন্ত ‘নৃশংস’ যা ফ্রান্সকে গভীর সামাজিক ও গণতান্ত্রিক সংকটে ডুবিয়ে দিচ্ছে।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও চাপ বাড়ছে দেশটির ওপর। এরইমধ্যে ফ্রান্সের সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ইউরোতে, যা দেশের মোট জিডিপির ১১৪ শতাংশ।
নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী পদে সিবাস্তিয়ান ছাড়াও সংসদের স্পিকার ইয়েল ব্রাউন-পিভে থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজনের নামই আলোচনাই রয়েছে। তবে বিরোধী নেতা মারিন ল্য পেন নতুন নির্বাচনের দাবিতে সরব।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং সামাজিক অশান্তির মুখে ফ্রান্স। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেশকে কতটা স্থিতিশীল করতে পারবে, এখন সেটিই বড় প্রশ্ন।