গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে যোগ দিতে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির নিরস্ত্রীকরণ শুরু

পিকেকের যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ
বিদেশে এখন
0

তুরস্কের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ চেয়ে সশস্ত্র সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরইমধ্যে তুরস্ক থেকে যোদ্ধাদের সরিয়ে নিচ্ছে তারা। গোষ্ঠীটির দাবি তারা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও ভ্রাতৃত্বমূলক জীবন চায়। সরকারি পদক্ষেপগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে কুর্দিবাসী। এদিকে, সংঘাত বন্ধ হওয়া সংশয়ে রয়েছেন তুরস্কের বাসিন্দারা।

কুর্দিদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে ১৯৮৪ সালে তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ায় কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি- পিকেকে। ৪ দশকের সশস্ত্র সংঘাত ও সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তুরস্ক ছাড়াও ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে গোষ্ঠীটির সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

সম্প্রতি তাদের কারাবন্দী নেতা আবদুল্লাহ ওচালান সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধের ডাক দেন। তার আহ্বানে গেরিলা দলটি নিজেদের নিরস্ত্রীকরণের ঘোষণা দিয়ে কিছু অস্ত্র পুড়িয়ে ফেলে। এরই অংশ হিসেবে রোববার তুরস্ক থেকে নিজেদের যোদ্ধা প্রত্যাহার শুরু করেছে পিকেকে। তবে গোষ্ঠীটি বলছে কুর্দি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় গণতান্ত্রিক উপায়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে তারা। আইন পাস করে তাদের রাজনীতিতে প্রবেশে আঙ্কারা সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।

আরও পড়ুন:

পিকেকে নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য সাবরি অকে বলেন, তুরস্ক থেকে পিকেকের সমস্ত বাহিনী প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করছি। শঙ্কার মধ্যেও প্রতিরক্ষা অঞ্চল ছেড়ে দিচ্ছে যোদ্ধারা। আমাদের নেতা আবদুল্লাহ ওচালানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তুরস্কের দিয়ারবাকির প্রদেশে বসবাসরত কুর্দিরা। কয়েক দশকের সংঘাত অবসানের অংশ হিসেবে তুর্কি সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিও জানান তারা।

এদিকে, পিকেকের নিরস্ত্রীকরণ ও যোদ্ধাদের প্রত্যাহারের পর শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে তুর্কি জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের কেউ কেউ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, অনেকের ধারণা বাস্তবে এর সুফল মিলবেনা।

যদিও প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন একে পার্টি বলছে, সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক গঠনে এটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। তুর্কি সরকারের দাবি, কুর্দিদের অধিকারের প্রতি সরকার শ্রদ্ধাশীল হলেও, তাদেরকে কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী পদক্ষেপের সুযোগ দেয়া হবে না।

পিকেকে একসময় স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামে নামলেও, সম্প্রতি তুরস্কের কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও সীমিত স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে সংগঠনটি। গেল কয়েক বছর ধরে তুর্কি বাহিনীর হামলার মুখে গেরিলা দলটি তাদের সদরদপ্তর উত্তর ইরাকে সরিয়ে নেয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখে পিকেকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত।

ইএ