বিনামূল্যে বাস পরিষেবা, চাইল্ড কেয়ার সার্ভিস এবং প্রায় ১০ লাখ নিউ ইয়র্কবাসীর বাড়িভাড়া মওকুফসহ বেশকিছু প্রতিশ্রুতি নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন জোহরান মামদানি। যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে নিউ ইয়র্কের এবারের মেয়র নির্বাচন। মামদানি নির্বাচিত হলে তিনি হবেন শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র।
নির্বাচন সামনে রেখে রোববার (২৬ অক্টোবর) নিউ ইয়র্কের কুইন্স স্টেডিয়ামে স্মরণকালের অন্যতম বড় শোডাউন করেন মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি। এতে যোগ দেন ১৩ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের বড় একটি অংশ তরুণ প্রজন্ম বা জেনজি।
মামদানির সমর্থকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। সবাই একটি স্থিতিশীল অবস্থা আশা করে। মামদানি তরুণদের সামনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছেন।’
আরেকজন বলেন, ‘প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচুর অর্থের জোগান দেখে মানুষজন বিরক্ত। তবে মামদানি শুরু থেকেই তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।’
জেনজিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাট দলের নেতারা তাদের টিকিয়ে রেখেছেন। এখানে এসে অসাধারণ মানুষদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেয়েছি, যা সত্যিই অসাধারণ।’
প্রচারণার শেষ র্যালিতে মামদানিকে সমর্থন জানান প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এবং কংগ্রেস-ওমেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ।
আরও পড়ুন:
ডেমোক্র্যাট সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, ‘আমেরিকানরা জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। তখন নিউ ইয়র্কে ডেমোক্র্যাটদের একটি জয় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ববাসীর মনে নতুন আশা ও অনুপ্রেরণা জোগাবে। এই নির্বাচনের উদ্দেশ্যই এটি । ট্রাম্পের অভিজাততন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্র হয়েছেন সবাই।’
সমাবেশে নিরাপদ শহর গড়ার প্রত্যয় জানান মামদানি। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও তাদের দোসরদের থেকে নিউ ইয়র্ক শহরকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
জোহরান মামদানি বলেন, ‘আমরা নিউ ইয়র্কের সঙ্গে আছি। আমরা বাস পরিষেবা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। নিউ ইয়র্কে আমরা সর্বজনীন। এমন একটি শহর গড়ে তুলবো যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি যারা এটিকে নিজের বাড়ি বলে মনে করবে। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দারা মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে।’
আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আগাম ভোটগ্রহণ। এখন পর্যন্ত বেশ এগিয়ে আছেন মামদানি। গেলো আগস্টে প্রাইমারিতে মামদানির কাছে বিপুল ভোটে হারার পর স্বতস্ত্র প্রার্থী হন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। তবে বিভিন্ন জরিপে তার চেয়ে অনেক ব্যবধানে এগিয়ে আছেন মামদানি।
এদিকে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানিকে প্রশংসায় ভাসালেন ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ধনকুবের ইলন মাস্ক। তাকে ডেমোক্র্যাট দলের ভবিষ্যত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মামদানিকে কমিউনিস্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। মামদানি মেয়র নির্বাচিত হলে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তাকে পরাজিত করতে রিপাবলিকানরা আইন প্রণেতারাও উঠেপরে লেগেছেন। এমনকি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা মামদানির বিরুদ্ধে জঙ্গী উত্থানের অভিযোগ তুলেছে।





