অস্ট্রেলিয়াতে এরমধ্যেই বিশ্বের অন্যতম কঠোর বন্দুক আইন রয়েছে। তবে বন্ডাই গোলাগুলির ঘটনায় এ অন্যতম কঠোর আইন রক্তপাত ঠেকাতে কতটা কার্যকরি তা নিয়ে এখন উঠেছে প্রশ্ন।
প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৯৬ সালে, তাসমানিয়ার পোর্ট আর্থার ঐতিহাসিক পর্যটনস্থলে এক বন্দুক হামলায় ৩৫ জন নিহত হন। যে হত্যাকাণ্ড তৎকালীন সরকারকে তীব্রভাবে নাড়া দেয়। কারা বন্দুক রাখতে পারবে, আর কারা পারবে না, এমন কঠোর নিয়ম করে, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়।
গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বন্ডাই হামলার আগ পর্যন্ত, কঠোর বন্দুক আইন যে একটি দেশকে কতটা নিরাপদ রাখতে পারে, অস্ট্রেলিয়া ছিল তার অন্যতম উদাহরণ। তবে অস্ট্রেলিয়া ইন্সটিটিউট নামক একটি থিঙ্ক ট্যাংকের মতে, বৈধভাবে মালিকানাধীন বন্দুকের সংখ্যা গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। যা ১৯৯৬ সালের আগের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাই রোববারের বন্দুক হামলা চলমান আইন নিয়ে নতুন করে ভাবাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার বন্দুক আইন আরও কঠোরতর করা হবে বলে গতকাল (সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। ন্যাশনাল ক্যাবিনেটের বৈঠকের পর তিনি জানান যে রাজ্য ও অঞ্চলগুলোর নেতারা আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়ে একমত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, ‘সরকার প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। কঠোর বন্দুক আইন প্রণয়ন এর মধ্যে অন্যতম। জাতীয় মন্ত্রিসভার এজেন্ডায় আরও কঠোর বন্দুক আইন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ব্যক্তিদের দ্বারা ব্যবহৃত বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকের সংখ্যার সীমাবদ্ধতা অন্তর্ভুক্ত।’
প্রস্তাবিত নতুন আইন অনুযায়ী, কেবল অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরাই বন্দুকের লাইসেন্স পেতে পারবেন। তারা কতগুলো ও কী ধরনের বন্দুক রাখতে পারবেন তা সীমিত করা হবে এ আইনে। পরিকল্পনা অনুযায়ী লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে, ফলে বন্দুক মালিকদের যোগ্যতা আরও ঘন ঘন যাচাই করা হবে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র আমদানির ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কাজ শুরু হবে।
এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আইন পরিবর্তন করা হবে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যে নিউ সাউথ ওয়েলসে প্রস্তাবিত সংস্কার ও পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
নিউ সাউথ ওয়েলস প্রিমিয়ারের ক্রিস মিন্স বলেন, ‘আমার মনে হয় নিউ সাউথ ওয়েলসে আগ্নেয়াস্ত্র আইন সম্পর্কিত আইনে পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে নিউ সাউথ ওয়েলসে সম্ভাব্য সংস্কার এবং পরিবর্তনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে।’
যদিও অস্ট্রেলিয়ায় রাজ্য ও অঞ্চলগুলো বন্দুক আইন নিয়ন্ত্রণ করে, তবে ১৯৯৬ সালে গৃহীত ন্যাশনাল ফায়ার আর্মস এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী, সব বন্দুক মালিককে লাইসেন্স নিতে হয় এবং প্রতিটি বিচারব্যবস্থায় তাদের অস্ত্র নিবন্ধন করতে হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সিডনির হামলায় জড়িত ৫০ বছর বয়সী বন্দুকধারী একটি শুটিং ক্লাবের সদস্য ছিলেন এবং তার বৈধ বন্দুক লাইসেন্স ছিল, যার আওতায় তার ছয়টি নিবন্ধিত আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।





