দিল্লিতে অতিবৃষ্টি-দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আটজনের প্রাণহানি

পরিবেশ ও জলবায়ু , এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অতিবৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে আটজনের। শহরের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতা, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্নসহ দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। হিমাচল প্রদেশ আর লাদাখেও মৌসুমের শুরুতেই আগ্রাসী রূপে বর্ষা।

৮৮ বছরের রেকর্ড সর্বোচ্চ বৃষ্টির দিন পার করেও স্বস্তি নেই দিল্লিবাসীর। শনি আর রোববারও রয়েছে মুষলধারে বৃষ্টির আভাস, জারি রয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা অরেঞ্জ অ্যালার্ট।

দুই কোটি বাসিন্দার শহরে শুক্রবার (২৮ জুন) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২২৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ, যা ১৯৩৬ সালের পর সর্বোচ্চ।

বর্ষাকালজুড়ে দিল্লিতে বৃষ্টির গড় ৮০০ মিলিমিটার হলেও চলতি মৌসুমের একদিনেই পুরো মৌসুমের ২৫ শতাংশ বৃষ্টি দেখে ফেলেছে নগরবাসী। জুন মাসে দিল্লিতে বৃষ্টির স্বাভাবিক গড় ৭৪ মিলিমিটার হলেও শুক্রবারের অতিবর্ষণের জেরে চলতি মাসে তিনগুণের বেশি বৃষ্টিপাত দেখলো নগরবাসী। এ সংখ্যাও ৮৮ বছরে সর্বোচ্চ।

|undefined

একদিনের বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতা, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা আর যানজটে নাগরিক জীবনে দেখা দিয়েছে তীব্র অরাজকতা। অথচ আরও প্রায় একসপ্তাহ আবহাওয়া এমনই থাকবে, বলছেন আবহাওয়াবিদরা।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'অনেক যানজট লেগে আছে। রাস্তায় এতো বেশি পানি উঠেছে যে বলার মতো নয়। যেখানে সেখানে গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে। সবাই ফিরে আসছে। আমারও গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যক্রমে আবার চালু করতে পেরেছি।'

এক শিক্ষার্থী বলেন, 'কোচিংয়ে যেতে পারছি না, মাঝপথে ফিরে যেতে হচ্ছে। মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই যদি পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার এমন করুণ হাল হয়, সামনে তো বৃষ্টির সময় আরও বাকি আছে।'

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বাড়ছে প্রাণহানিও। পরিস্থিতির জন্য দিল্লির আম আদমি সরকারকে দায়ী করেছেন দিল্লির বিজেপি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলর বিনোদ নেগি।

তিনি বলেন, 'গত একমাস ধরে আমরা বলছি যে নালাগুলো পরিষ্কার করুন। কিন্তু দিল্লি সরকারের কানে তো কথা ঢুকে না। সেজন্য আজ পুরো শহর পানিবন্দি, পুরো দিল্লিতে পানি উঠে গেছে। তাও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।'

|undefined

তবে বৃষ্টির কল্যাণে মাসব্যাপী দাবদাহ আর বায়ুদূষণের হাত থেকে অল্প সময়ের জন্য হলেও মুক্তি মিলেছে দিল্লিবাসীর। শুক্রবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। শহরের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ। বিশ্বের অন্যতম দূষিত নগরীটিতে এদিন বায়ু মান সূচক ছিল সন্তোষজনক।

এদিকে বর্ষার ক্ষুব্ধ রূপ দেখতে শুরু করেছে উত্তরের হিমাচল প্রদেশও। অতিবৃষ্টির জেরে সোলানে আকস্মিক বন্যা আর ভূমিধস ও পাথরে পাহাড়ে ধস নেমেছে সিমলায়। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পর্যায়ের আবহাওয়া সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। এছাড়া কেন্দ্রশাসিত লাদাখ অঞ্চলেও নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে টহলের সময় হড়পা বানে শনিবার নিখোঁজ হয় কমপক্ষে পাঁচ সেনা।