আরব সাগরে সৃষ্ট সাইক্লোনের প্রভাবে আকাশে মেঘের ঘনঘটা আরও তিনদিন আগে থেকে। স্বাভাবিক সময়ের আগেই কিছু রাজ্যে সবে শুরু হয়েছে বছরের প্রথম বৃষ্টি। ভারী আর মুষলধারে বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টি চলছে আরও কিছু রাজ্যে। দাবদাহ পরিস্থিতি থেকে স্বস্তি মিললেও বিরামহীন বৃষ্টিতে জনজীবন থমকে গেছে অনেক শহরে।
গেলো ক'দিন ধরেই ভারী বৃষ্টির কবলে দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটক। রাজ্যের মোট ২২টি জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইয়েলো অ্যালার্ট জারি রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ। প্রাদেশিক রাজধানী ও হাই-টেক শিল্পনগরী বেঙ্গালুরুতে দুর্বল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা।
এক অধিবাসী জানান, সবখানে পানি। রাস্তাঘাট, ড্রেন সব জায়গায়। অফিসে যেতে পারিনি। অফিস এলাকাতেও পানি। পার্কিং পুরোটা ডুবে গেছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কারে সরকারকে ব্যবস্থা নিতেই হবে। নাহলে অনেক বেশি সমস্যায় পড়ছি আমরা।
৩৬ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বেঙ্গালুরুর ৭০ শতাংশ এলাকা। প্রথম ২৪ ঘণ্টাতেই ১০৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় অনেকে, যা ২০১১ সালের পর সর্বোচ্চ। বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণ সরবরাহে অবিলম্বে এক হাজার কোটি রুপির তহবিলের জন্য কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিজেপি। আপাতত শহরের খাল ব্যবস্থার ধারণক্ষমতা পর্যাপ্ত নয় জানিয়ে জলাবদ্ধতা কমানোর উপায় খুঁজছে প্রশাসন।
বেঙ্গালুরুর নগর পুরসভা করপোরেশন কমিশনার মহেশ্বর রাও বলেন, ‘যে খালের মাধ্যমে পানি বেরিয়ে যায়, সেটির ধারণক্ষমতা যথেষ্ট নয়। এই সমস্যা থেকে বের হওয়ার সেরা সমাধান কী হতে পারে, সে পথ বের করতে আমি আমার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি। না হলে যেভাবে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে, তাতে সবসময় জলাবদ্ধতা তৈরি হতেই থাকবে।’
আরব সাগরের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলে সাইক্লোনের প্রভাবে বুধবার মহারাষ্ট্রের পুনে, মুম্বাই ও আসামের গুয়াহাটিতে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। সিন্ধুদুর্গে সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা রেড অ্যালার্ট, পুনেসহ নয়টি শহরে অরেঞ্জ অ্যালার্ট ও বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে ইয়েলো অ্যালার্ট জারি আছে। বৃষ্টির কারণে গরম থেকে স্বস্তি মিললেও ব্যস্ত কর্মদিবসে জলাবদ্ধতা আর যানজট ভোগাচ্ছে নগরবাসীকে।
দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চল, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে কয়েকদিন টানা বৃষ্টি ও বজ্রসহ ঝড়ো বাতাসের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।
অন্ধ্র প্রদেশ, পুদুচেরি, গোয়া থেকে শুরু করে আসাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশসহ মোট ১৬টি রাজ্যে জারি আছে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ও বন্যার সতর্কতা।
তামিলনাড়ুতেও চলছে ভারি বৃষ্টিপাত। কেরালায় চার-পাঁচদিনের মধ্যে পুরোদমে বর্ষাকাল শুরু হয়ে যাবে বলে আভাস রয়েছে। বলা হচ্ছে, পাঁচ থেকে ছ'দিন দেশের বড় অংশজুড়ে থাকবে এমনই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া।