মৌসুমি বায়ু সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ুতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে। এটা মূলত গ্রীষ্মকালের মৌসুমি বায়ু। ভারতের লাক্ষাদ্বীপ, কেরালা, কর্ণাটকসহ তামিলনাড়ু ও মিজোরামের বেশকিছু অংশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে জুন মাসে। যা ৮ জুলাইয়ের মধ্যে পুরো ভারতে বিস্তৃত হয়। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে বিদায় নেয় মৌসুমি বায়ু।
এবার বেশ আগেভাগেই আগমন ঘটলো বর্ষা মৌসুমের। গেল শনিবার ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের কেরালা রাজ্যে আঘাত হানে মৌসুমি বায়ু। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এর আগে ২০০৯ সালের ২৩ মে কেরালায় প্রবেশ করছিল মৌসুমি বায়ু। ১৬ বছর পর একই ঘটনা ঘটলো।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের বিজ্ঞানী নরেশ কুমার বলেন, ‘কেরালায় বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। যা তার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক সপ্তাহ আগে। সাধারণত এটি জুন মাসে শুরু হয়। শুধু কেরালায় নয়, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুর কিছু অংশেও মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে।’
আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে গোয়া, মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ, অন্ধ্র প্রদেশ, উত্তর-পূর্ব রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর বাকি অংশে এর প্রভাবে বৃষ্টিপাত বাড়বে। এতে কৃষিখাতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগাম বর্ষায় লাভবান হবেন ভারতের কৃষকরা। বিশেষ করে দক্ষিণ ও মধ্য রাজ্যগুলোতে বাড়বে ধান, ভুট্টা, তুলা, সয়াবিন ও আখের ফলন।
ভারতের চার ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির বড় একটি অংশ কৃষি নির্ভর। দেশটির প্রায় অর্ধেক কৃষিজমিতে সেচের ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে নির্ভর করতে হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টিপাতের ওপর। কৃষিকাজে পানির ৭০ শতাংশ পূরণ করে এই মৌসুমের বৃষ্টিপাত।
আগাম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রাণহানির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। এতে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, টানা দুই বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ভারতে গড় বৃষ্টির চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।