সরকারি জায়গা দখলকারীদের হুঁশিয়ারি দিলেন ডিএনসিসির প্রশাসক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান
দেশে এখন
0

২০২০ সালের ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর গত জুন পর্যন্ত ২৯টি খাল ও একটি জলাধার সংস্কারে ৬১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। কথা ছিল-খালে ফিরবে পানির প্রবাহ, বর্ষায় নগরীজুড়ে কমবে জলাবদ্ধতা। যদিও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জুলাই আন্দোলন পরবর্তী পটপরিবর্তনে সিটি করপোরেশনের নতুন প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার পর ফের খাল উচ্ছেদ করছেন। গুড়িয়ে দেয়া হয় মোহাম্মদপুর বছিলার হাইক্কার খাল দখলে নিয়ে গড়ে উঠা স্থাপনা।

খাল থেকে নৌকায় করে যাওয়া যাবে নদীতে। বিভিন্ন সময় খালের পরিষ্কার বা উচ্ছেদ অভিযানে এমন স্বপ্নের কথা শুনিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর গত জুন পর্যন্ত ২৯টি খাল ও ১টি জলাধার সংস্কারে ৬১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খরচ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি। খাল ও নালা খনন, পরিষ্কার ও উন্নয়ন এবং সীমানা নির্ধারণ বাবদ এ টাকা খরচ করা হয়। যদিও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

আজ (বুধবার, ২৩ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কাটাসুর খালে অবৈধ স্থাপনা ও ভবন উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। স্থানীয়দের কাছে যা হাক্কার খাল নামে পরিচিত। খালটির জায়গা দখলে নিয়ে তৈরি করা হয় বহুতল ভবন, মসজিদসহ বহু স্থাপনা।

হাইক্কার খাল দখলের শুরুটা করেছিলো মূলত সিটি করপোরেশন। বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের দেয়াল দেয়া হয়েছে খালের উপরেই। এ দেয়ালকে আড়াল করে গড়ে উঠছে এমন বহুতল ভবন।

স্থানীয়রা বলছেন, খালটিকে পর্যায়ক্রমে দখলে নেয়া হয়েছে। একসময় এ খালে ছিল পানির প্রবাহ। চলাচল করতো ছোট বড় নৌযান।

খালটিতে পানির প্রবাহ ফেরাতে গুড়িয়ে দেয়া হয় অবৈধ ২টি বহুতল ভবন। অপসারণ করা হয় মসজিদের বর্ধিত বাড়তি অংশ। পর্যায়ক্রমে করা হবে খাল খনন।

ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম বলেন, 'এই খালকে আমরা অবৈধ দখলদার থেকে মুক্ত করতে পারবো। আপনারা দেখেছেন যে, আমরা ইতোমধ্যেই একটি অবৈধ ভবন ভেঙেছি। আরো যেগুলো আছে ,সেগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে ভাঙবো।'

ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানায়, এর আগেও কাটাসুর খালে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে সিটি করপোরেশন। স্থানীয়দের চ্যালেঞ্জের পর দুই পক্ষের যৌথ জরিপেও দেখা যায় ভবনগুলো খালের সীমানার মধ্যে রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এজাজ বলেন, 'আমি যখন এগুলো ভেঙে দিতে বলেছিলাম তখন স্থানীয় লোকজন চ্যালেঞ্জ করলো যে এগুলো খালের মধ্যে নয়।তখন আমরা সকলকে নিয়ে তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে যৌথ জরিপ করে দেখেছি যে এগুলো খালের মধ্যে আছে।'

এবার নোটিশ দেয়া হলেও আগামীতে অবৈধ খাল এবং জমি দখলদারদের উচ্ছেদে কোন নোটিশ দেয়া হবে না বলেও জানান ডিএনসিসির প্রশাসক।

এজাজ আরো বলেন, 'যারা সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বাড়ি-ঘর করে ভোগ-দখল করছেন তারা ঘুম থেকে জাগুন এবং নিজ দায়িত্বে এগুলো ভেঙে সরে যান। নাহলে আমরা কোনো নোটিশ দিব না, বরং সরাসরি উচ্ছেদ করবো। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় আমরা মাঠ উচ্ছেদ করছি, হকারদের উচ্ছেদ করছি।'

সিটি করপোরেশনের এমন উচ্ছেদকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খাল ও জলাধারে প্রবাহ ফেরানো গেলে বর্ষায় জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে নগরবাসী।

এসএইচ