তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের— যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে শাহাদাতবরণ করেছেন। আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। একইসঙ্গে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সব জুলাই যোদ্ধাকে, যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন বা হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। জাতি তাদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণই ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়া। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন
তিনি জানান, জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। শহিদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সকল সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধান এবং শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাণীর শেষে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে—একটি ন্যায়ভিত্তিক, সাম্যবাদী ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহিদের আত্মত্যাগ যে রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনো দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে হবে। আসুন, আমরা একসঙ্গে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কখনও স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।’