দেশে এটিএম বুথ ও কার্ড ব্যবহারকারী বাড়ছে

অর্থনীতি , ব্যাংকপাড়া
দেশে এখন
0

দেশের ব্যাংকিং লেনদেনে দিন দিন বাড়ছে এটিএম বুথের সংখ্যা। যে কারণে বাড়ছে এটিএম কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ হাজার এটিএম বুথ রয়েছে। তবে প্রশ্ন হলো, চালু হওয়া পর দেশে গত ৩ দশকে কতটা ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে ব্যাংকের কার্ড দিয়ে লেনদেন করার এই এটিএম বুথ মেশিন?

বাংলাদেশে ১৯৯২ সালে শুরু হয় এটিএম বুথের ব্যবহার। সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে যা অল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শহর-নগর থেকে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃতি পেয়েছে ব্যাংকের শাখা ছাড়া কার্ডের মাধ্যমে এই লেনদেন সুবিধা।

এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিয়ে খুব বেশি সুখবর পাওয়া যায় না। সবশেষ গত ২৮ অক্টোবর সিলেটে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা লুট হয়। যা লুট করেছে ওই বুথের মেশিনে টাকা ঢুকিয়ে দেয়া ও উত্তোলন করার কাজ সম্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যেখানে দেখা যায়, টাকা লুট করতে তাদের কোন বেগ পেতে হয়নি। বুথের লকার খুলে ভল্ট থেকে তারা সহজেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। যদিও পরে তাদের গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এর আগে চলতি বছরের মার্চে ঢাকায় একই ব্যাংকের বুথে টাকা ঢুকানোর কাজ করতে যাওয়ার সময় পথে গাড়ি থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা লুট হয়। এছাড়া গত বছর ২৩১টি বুথ থেকে টানা পাঁচ মাসে খুব কৌশলে একটি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের ১১ জন কর্মী প্রায় আড়াই কোটি টাকা লুট করে।

এটিএম বুথে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা জানান, মূলত দুইটি মাধ্যমে বুথে টাকা ঢুকানো ও উত্তোলন করা হয়। যার মধ্যে কোনো কোনো ব্যাংক নিজেরা এ কাজ করেন। আবার কিছু ব্যাংকে তৃতীয় কোন কোম্পানির মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করানো হয়।

 আরো পড়ুন:

নিরাপত্তা রক্ষীরা বলছেন, এ কাজ চলার সময় বাইরে থেকে তারা বুথ বন্ধ করে পাহারা দেন।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুইটি কারণে এটিএম বুথ থেকে টাকা লুট বা খোয়া যায়। আর এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এটিএম বুথ রক্ষণাবেক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অবহেলাকে দায়ী করছেন।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভির হাসান জোহা বলেন, 'দুর্বল অপারেটিং সিস্টেমের কারণে বিশেষায়িত কার্ডের মাধ্যমে এটিএম বুথের টাকা লুট করতে পারে। আর যেহেতু ব্যাংকে বসে বুথের প্রত্যেকটি লেনদেন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা যায়, তাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে এটিএম বুথের নিরাপত্তা কোনোভাবে বিঘ্নিত হওয়ার কথা নয়।'

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের দাবি, সব ব্যাংকেই সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সব বুথ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তবে টাকা ঢুকানো ও উত্তোলনের সাথে জড়িত তৃতীয় পক্ষ যদি লুটের সাথে জড়িত থাকে তার দায়ভার ও ঝুঁকি ব্যাংক কিংবা গ্রাহকের ওপর পড়েনা বলেও জানানো হয়।

সোনালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, 'আমাদের এটিএম মেশিনের সফটওয়্যারগুলো নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়। তাই কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হলে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। আগামী দিনে ক্যাশলেস লেনদেন বাড়লে এটিএম মেশিনের ওপর নির্ভরতাও কমে আসবে।'

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, ‘অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হলে কিছু মহল এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। আর এটিএম বুথের বাহ্যিক নিরাপত্তায় নির্দিষ্ট একাধিক টিম সার্বক্ষণিক সোচ্চার থাকে’।

সেজু