ভিসি পদত্যাগের একদফা দাবিতে উত্তাল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিক্ষোভ মিছিল আর আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার সকালে সশরীরে কুয়েট ক্যাম্পাসে যান শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে। এসময় শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে আইনের ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেই প্রতিবেদন হাতে পাওয়া মাত্রই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া নেয়ার আশ্বাসে অনশন থেকে সরে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। তবে সেই আশ্বাসে আস্থা রাখছে না শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি তিনজনের একটি কমিটি গঠন করা হবে। যেখানে ইউজিসির একজন সদস্য আছেন, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি আছেন তারা সার্বিকভাবে পুরো জিনিসটা পর্যবেক্ষণ করে তারা আমাদের একটা সাজেশন দেবেন, রিকমেন্ডেশন দেবেন। সে হিসেবে আমরা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবো।’
তিনি বলেন, ‘তারা চাইছে এখনি আমরা কোনো ঘোষণা দেই, যার মাধ্যমে তারা যেন অনশন শেষ করতে পারে। আমরা তাদের বোঝাতে চেয়েছি যে, আইনের কিছু বিষয় আছে। আমরা যাই করিনা কেন সেটা আইন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে হবে।’
এদিকে সকালেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন ইউজিসির ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। কথা বলছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে। দ্রুত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে জানান দলটির আহবায়ক।
এদিকে, আমরণ অনশনের পাশাপাশি আজও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দাবি তাদের। অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরও ৪ জনকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এনিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ জনে।
এদিকে দুপুরে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসময় পদত্যাগের বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মেনে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার সুরাহা না হওয়া না পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের পাল্টা ঘোষণা দেন তারা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর হামলার পর থেকে নানা দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি করলেও কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। তারপর থেকে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৬ দফা দাবি পরিণত হয় ভিসি বিরোধী আন্দোলনে।