২৮ আগস্ট চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই ক্যাম্পাসে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। রঙ তুলির আঁচড়ে নতুন করে সাজছে চাকসু ভবন। ক্যাম্পাসের শাটল, ঝুপড়ি কিংবা আড্ডা সব জায়গায় একটিই আলোচনা, চাকসু নির্বাচন।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধি না থাকার জন্য আমাদের কোনো কিছু চাওয়া থাকলে সেটা ভিসি স্যার বা কর্তৃপক্ষের কাছে সঠিকভাবে জানাতে পারতাম না।’
৩৫ বছর পর নির্বাচন তাই বলা যায় শিক্ষার্থীদের কারোই নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নেই। জীবনে প্রথমবার হবেন প্রার্থী। কে কোন পদে দাঁড়াবেন? কীভাবে মন জয় করবেন শিক্ষার্থীদের? প্রতিশ্রুতি কী হবে? এ নিয়েই চলছে আলোচনা। ছাত্র সংগঠন থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী সবাই নিচ্ছেন প্রস্তুতি।
চবি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের যে ডেডলাইন দিয়েছে আমরা চাই সে ডেডলাইনের মধ্যে চাকসু নির্বাচনটা হোক। এর সময় যেন আরও কমিয়ে নিয়ে আসা যায় সেজন্য আমাদের দাবি থাকবে। শিক্ষার্থীদের জন্য যে যৌক্তিক সময় প্রয়োজন সে সময় রেখে যেন নির্বাচনটা হয়।’
আরও পড়ুন:
প্রায় দুই হাজার ৩০০ একরের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার। অথচ প্রতিষ্ঠার ৫৯ বছরে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হয়েছে মাত্র ছয়বার। এবার হবে সপ্তম চাকসু নির্বাচন। তবে অনেকের মনে শঙ্কা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তো?
চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘প্রশাসনের সংস্কার করে দ্রুত একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হলে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোট হবে কি না আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি।’
চবি ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মোহসীন বলেন, ‘তফসিল কিছুটা ত্রুটিপূর্ণ মনে করছি। তবে সবকিছু ওভারকাম করে এ প্রশাসন সঠিক সময়ে চাকসু নির্বাচন দেবে আমরা এ আশা করছি।’
এছাড়া গঠনতন্ত্রের কিছু বিষয় নিয়েও আপত্তি তুলেছেন ছাত্র নেতারা।
আরও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ যুগ্ম সম্পাদক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে এ নারী বিদ্বেষমূলক যে গঠনতন্ত্রটি রয়েছে সেটি পরিবর্তন করে নারী এবং পুরুষ শিক্ষার্থী সবারই সমান অধিকার রয়েছে। এ ত্রুটিপূর্ণ গঠনতন্ত্রে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হয়ে থাকবে।’
তবে সব সংশয় কাটিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রশাসনের।
চবি উপ উপাচার্য ড. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘কোনো অজুহাতে চাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের বানচাল পাঁয়তারা চলবে না। আমরা (শিক্ষকরা), শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে একটি গণতান্ত্রিক ধারা চালু করতে চাই।’
এর আগে সবশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে।