বর্ষা এলেই চাঁদপুরের লাখো কৃষকের চাষাবাদের স্বপ্ন তলিয়ে যায় অথৈ জলে। দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় জমি চাষাবাদের অনুপযোগী থাকায় বঞ্চিত হয় ফসল আবাদ থেকে। অথচ এসব কৃষকের জীবিকা উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন কৃষি কাজ।
হাইমচর উপজেলার মধ্য চরভাঙ্গা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক আলী আরশাদ। দুই মাস আগে বিশ শতক জমিতে প্রস্তুত করেছিলেন আমনের বীজতলা। কিন্তু অতিবৃষ্টি আর নদীর জোয়ারের পানিতে তা ভেসে গেছে।
আলী আরশাদ বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা কৃষিতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের ধার-দেনা বেড়ে যাচ্ছে।’
আলী আরশাদের মত এমন কষ্টে আছেন জেলার লাখো কৃষক। উপজেলার মহজমপুর ও চরভাঙ্গা এলাকায় থাকা কালভার্ট দুটি হয়ে উঠেছে কৃষকদের গলার কাঁটা। তাছাড়া প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই খাল, নালা ভরাট, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বছরের ছয় মাস চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন লাখো কৃষক। জলাবদ্ধতার কারণে তিন ফসলি জমি পরিণত হয়েছে এক ফসলিতে।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জলাবদ্ধতার কারণে তারা ৬ মাস জমিতে চাষ করতে পারে না। শুধুমাত্র একটি ফসল চাষ করতে পারছে কৃষকেরা।
হাইমচর উপজেলায় একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ হলে আবাদের আওতায় আসবে অন্তত দুইশ হেক্টর জমি। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ চলছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। এ সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
জলাবদ্ধতা নিরসনে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের পাশাপাশি খাল সংস্কারের কথা জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় আমরা ছয়াটি পাম্প পুনঃস্থাপন করবো। পাশাপাশি খালগুলো পুনঃখনন করবো।’