নওগাঁয় সরিষা ফুল থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার মধু সংগ্রহের আশা

কৃষি
এখন জনপদে
0

নওগাঁয় অন্য বছরের তুলনায় বেড়েছে সরিষা চাষ। সাথে খেতের পাশে মৌ বক্সে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছেন মৌ খামারিরা। এতে একদিকে ফুলের পরাগায়নে বেড়েছে সরিষার ফলন। সাথে মধু সংগ্রহ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে মৌ খামারিরা। চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষা ফুল থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার মধু সংগ্রহের আশা কৃষি বিভাগের।

নওগাঁর ১১টি উপহেলার মধ্যে ৯টি উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সরিষার চাষ হয়েছে। প্রতি বছর শীতের এই সময়ে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে নওগাঁয় ছুটে আসেন বিভিন্ন জেলার মৌ খামারিরা। এবারও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে মধু সংগ্রহে এসেছেন অনেক মৌ চাষি।

সরিষা খেতের পাশে বক্স বসিয়ে সংগ্রহ হচ্ছে মধু। এ পদ্ধতিতে মৌসুমে অন্তত ৬ থেকে ৮ বার মধু পাওয়া যায়। খাঁটি মধু পেতে ভিড় জমান ক্রেতারাও। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি মধু বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩শ' থেকে ৪শ’ টাকা।

রাজশাহীর মোহনপুর থানার দর্শনপাড়া গ্রামের মৌ চাষি রুমিনুল ইসলাম রুস্তম। তিনি এবছর নওগাঁর মান্দা উপজেলার সোনাপুর গ্রামে ১শ'টি মৌ বক্সের মাধ্যমে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লাখ টাকা মধু সংগ্রহ করেছেন। আরো প্রায় ৫ লাখ টাকার মধু সংগ্রহের আশা তার।

রুমিনুল ইসলাম রুস্তম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি ৫০ মণ মধু সংগ্রহ করেছি। আরো ৫ বার হারভেস্ট দিলে ৫০ মণের উপরে মধু আসা করা যাচ্ছে।’

রুস্তমের আরো অনেকেই মৌ বক্স বসিয়ে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। এ বছর কুয়াশার পরিমাণ কম থাকায় এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় মধুর উৎপাদনের সাথে পরাগায়নের মাধ্যমে বেড়েছে সরিষার ফলন। আর এসব কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার ও তরুণের।

মৌ চাষিদের একজন বলেন, ‘আমি এবছর দুইবার মধু সংগ্রহ করেছি যারা বাজার মূল্য দেড় লাখ টাকা।’

আরেকজন বলেন, ‘সরিষা খেতের পাশে যেখানে মধু চাষ হচ্ছে সেখানে সরিষার ফলন বেশি হচ্ছে।’

মৌ চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি মধু সংগ্রহ করে অনলাইনে বিক্রি করছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। যা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে অনেক ক্রেতা কুরিয়ার থেকে পণ্য সংগ্রহ না করায় আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন উদ্যোক্তারা।

উদ্যোক্তাদের একজন বলেন, ‘এখান থেকে আমরা পাইকারি মধু নিয়ে যায়। এরপর খুচরাভাবে বিক্রি করে আমার সংসার চালায়।’

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, সরিষা চাষের পাশাপাশি মধু উৎপাদন বাড়াতে পরামর্শ ও কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মৌ চাষ হলে সরিষার খেতে পরাগায়ন ভালো হয়। যার ফলে সরিষার ফলন বুদ্ধি পায়।’

জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এ বছর জেলায় প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যেখান থেকে চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ কেজি মধু সংগ্রহের আশা। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।

সেজু