পাহাড়ে ছড়িয়েছে বিজুর রঙ

শিল্পাঙ্গন
এখন জনপদে
0

চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ছড়িয়ে পড়েছে বিজু উৎসবের রঙ। বাংলা পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বর্ষ বরণকে ঘিরে পাহাড়িরা ১৫ দিনব্যাপী উৎসব করে থাকে। ১২ এপ্রিল কাপ্তাই হ্রদে ভাসানো হবে ফুল। মূল উৎসব হয় ৩০ চৈত্র। এরপরই ঘরে ঘরে পাজন, বিভিন্ন উপাদেয় খাবার, মিষ্টান্ন, পিঠাপুলি ও ফল আপ্যায়ন দিয়ে বরণ করা হবে নতুন বছরকে। পাহাড়িদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সমতল থেকে আসা মানুষও যোগ দেন এ উৎসবে।

পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটিতে এ বর্ণিল আয়োজনের শুরু হয়েছে গত ৩ এপ্রিল। রাঙামাটি জেলা পরিষদ ও রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট যৌথভাবে ৩-৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৭ দিনব্যাপী বিজু মেলার আয়োজন করে।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীদের একজন শেখ আজরিন সাদিয়া তনয়া বলেন, 'প্রতিবছরই আমাদের রাঙামাটিতে বিজু উৎসব উপলক্ষে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আমার অনেক ভালো লাগে এখানে অংশ নিতে পেরে। সবার সাথে দেখা হয়, অনেক সুন্দর সুন্দর চিত্র দেখতে পারি, নিজেও আঁকি।'

মঞ্জুসা চাকমা বলেন, 'আমরা এপ্রিলের ১১, ১২, ১৩ এই তিনদিন বিজু উৎসব পালন করি।'

ছন্দ সেন চাকমা বলেন, 'এসব খেলাধুলায় আমাদের নিজস্বতা রয়েছে। এই সময়ে গ্রামগুলোতে জমজমাটভাবে এসব খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। এতে আমাদের পরম্পরায় লালিত ঐতিহ্য ও ভ্রাতৃত্ববন্ধন দৃঢ় হয়ে থাকে।

মেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা তৈরি, পাজন রান্না, নাটক, চিত্রাঙ্কন ও বর্ণমালা লিখন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

দ্বিতীয় ধাপে ৯ এপ্রিল থেকে চার দিনব্যাপী বিজু উৎসব শুরু হয়েছে। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাঙামাটি মারী স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর গ্রামীণ খেলাধুলা ও বিকেলে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১১ এপ্রিল বিকালে মারী স্টেডিয়ামে বলি খেলা ও ১২ এপ্রিল কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় ধাপের এই উৎসব। বর্ণিল এই উৎসবে অংশ নিতে পেরে খুশি অংশগ্রহণকারীরাও।

এ আয়োজনের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষ করবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

শেষ ধাপে ১৬ এপ্রিল রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া মারমাদের সাংগ্রাই জল উৎসবের মধ্য দিয়ে ১৫ দিন ব্যাপী পাহাড়ের বর্ণিল এই বৈসাবী উৎসবের সমাপ্তি হবে।

এসএইচ