বৃষ্টি আর উজানের ঢলে রাঙামাটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বাড়ছে দুর্ভোগ

বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ডুবে যাওয়া নিম্নাঞ্চল
এখন জনপদে
1

থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে চলছে প্রতিনিয়ত। এরইমধ্যে রাঙামাটি সদর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে।

দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। তবে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে উঠতে হয়নি। এদিকে বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুই দফায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে ১৮ ইঞ্চি খুলে দেয়া হয়েছে।

গত ২৮ জুলাই থেকে রাঙামাটিতে বর্ষণ শুরু হয়। এরপরেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। বাড়তে থাকে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা।

এরইমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে পর্যটন ঝুলন্ত সেতু। ভ্রমণ করতে না পেরে দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বিরূপ প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতেও।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বাড়ায় পর্যটন ঝুলন্ত সেতু এরইমধ্যে রেলিংসহ ডুবে গেছে। সেতুর পাটাতন রেলিঙের উচ্চতা সাড়ে তিন ফুট। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সেতু ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমে গেলে সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’

সর্বশেষ গতকাল সকাল থেকে রাঙামাটির বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের মাচালং বাজার এলাকা তলিয়ে যায় । এতে বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় সড়কের দুইপ্রান্তে আটকা পড়েন প্রায় ৬শ পর্যটক। তবে আজ দুপুরের দিনে পানি সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, ‘সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। সাজেকের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। এরইমধ্যে সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকরাও ফিরে গেছেন। নতুন করে পর্যটকরাও আসতে পারছেন।’

এদিকে কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৮ দশমিক ৭২ ফুট। তাই উজানের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে ১৮ ইঞ্চি খুলে দেয়া হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩০ হাজার কিউসেক পানি হ্রদ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে ৫টি ইউনিট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। প্রয়োজনে জলকপাট আরও বেশি করে খুলে দেয়া হবে।

এএইচ